শুরু হয়ে গেল ২৪ এর তোড়জোড়। নতুন বছর পড়তে না পড়তেই রাজ্যে সভা করার ধূৃম পড়ে গেল বিজেপির। তালিকায় প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে অমিত শাহ, নাড্ডা কেউ বাদ নেই। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে সভা ও কর্মী সম্মেলন করবেন তারা। বসে নেই তৃণমূলও। বিজেপির কর্মসূচিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দলীয় সংগঠনকে মাঠে নামতে নির্দেশ মমতা, অভিষেকের।
advertisement
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়েই 'দিদির সুরক্ষাকবচ'? বিজেপিকে খোঁচা দিয়েই জবাব মমতার
বছরের শুরুতেই রাজ্যে বিজেপির হাই ভোল্টেজ ক্যাম্পেন। বিজেপি সূত্রে এখন পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, তাতে জানুয়ারি মাসেই বিজেপির প্রবাস কর্মসূচিতে রাজ্যে আসার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দলে সেকেন্ড ইন কমান্ড অমিত শাহের। সঙ্গে সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও। দিনক্ষনের হিসাবে নাড্ডা, আসছেন ৭ জানুয়ারি। ঐ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের চন্ডীপুরে, শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে সভা ও সাংগঠনিক কর্মসূচি করবেন নাড্ডা। পরের দিন কলকাতায় জাতীয় গ্রন্থাগারে দলের সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন নাড্ডা। নাড্ডা ফিরতে না ফিরতেই ১৭ জানুয়ারি রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অনুব্রতর খাস তালুকে সভা করবেন শাহ। বীরভূমের সিউড়িতে শাহের সভার জন্য আজ সভার মাঠ পরিদর্শন করেছেন সাংসদ ও দলে বীরভূমের দায়িত্বপ্রাপ্ত লকেট চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যে শাহের একদিনের প্রবাস কর্মসূচিতে একদিনে শাহের দুটি সভা করার কথা। একটি বীরভূৃমের সিউড়িতে অন্যটি হুগলির আরামবাগে। শাহের দিল্লি ফেরার ৪৮ ঘন্টা পরেই উত্তরবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, রাজ্যে দলের প্রবাস কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ১৯ শে জানুয়ারি শিলিগুড়িতে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন: 'প্রধানমন্ত্রীর মা মারা গেছেন, এ নিয়ে মন্তব্য করব না', হঠাৎ কেন বললেন মমতা?
সূত্রে খবর, শুধু মোদি, শাহ বা নাড্ডারাই নয়, রাজ্য প্রবাস কর্মসূচিতে একাধীক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরও আসার সূচি রয়ছে আগামী কয়েক মাসে। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রাজ্যে ঝাঁপিয়ে পড়াকে অবশ্য প্রকাশ্যে গুরুত্ব দিতে চাইছে না তৃণমূল। তৃণমূলের মুখপাত্র কূণাল ঘোষ বলেন, ''ওরা যত আসবে ততই ভাল তৃণমূলের জন্য। ওরা এলে ওদের দেখিয়ে কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতিগুলো প্রচার করতে সুবিধা হবে আমাদের। ওরা এসে কি বলবেন? পেট্রল,ডিজেলের দাম বাড়ছে কেন? বেকারত্ব বাড়ছে কেন? রাজ্যের বকেয়া টাকা আটকে রাখার কথা বলবেন? ২০১৯, ২০২১ এর আগেও নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা এ রাজ্যে কার্যত ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন। তাতে লাভ কিছু হয় নি। রাজনৈতিক পর্যটন করতে আসছেন। আসবেন। ফল একই হবে। "
যদিও, বিজেপির শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, " ১৯ এর লোকসভা ভোট আর ২৪ এর নির্বাচন আলাদা। ১৯ এ আমাদের বিধানসভায় দলের যা শক্তি ছিল, ২৪ এ যখন আমরা নির্বাচনে যাব,তখন তার দশগুণের বেশি শক্তি নিয়ে নামছি। দূর্নীতি, স্বজনপোষন আর উন্নয়নহীনতায় রাজ্য খাদের কীনারে। তারসঙ্গে রয়ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে বিপথে চালিত করে দেশ ভাঙার চক্রান্ত। এই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে গোটা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যের মানুষও মোদীর পাশে থাকতে চাইছে। ভোট যত এগোবে ততই এই ঝড় বাড়বে। ফলে, এসব কথা বলে তৃণমূল পার পাবে না। "
আরও পড়ুন: ১০২ শূন্যপদ এসএসসি নবম-দশমে! নিয়োগ হয়নি কেন? ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
এদিকে, আজই নজরুল মঞ্চ থেকে অভিষেককে পাশে নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্যের প্রকল্প নিয়ে আগামী ২ মাসের মধ্যে রাজ্যের ২ কোটি পরিবারের দুয়ারে দুয়ারে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন দলকে। অন্যদিকে, কেন্দ্র ও রাজ্যের ১০০ নেতা তালিকা তৈরি করেছে বিজেপি। যারা প্রত্যেকে ১০ টি করে অঞ্চলকে লোকসভা ভোটের জন্য তৈরি করবেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূল, বিজেপির এই কর্মসূচিকে প্রচার সর্বস্ব আস্ফালন এবং আয়নায় মুখ দেখাদেখির রাজনীতির সঙ্গে তুলনা করে সিপিএম দাবি করেছে, ভোট দিতে পারলে মানুষ আসন্ন পঞ্চায়েতে এদের দুজনকেই সমুচিত জবাব দেবে। রাজনৈতিক মহলের মতে পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে রাজ্য রাজনীতির পারদ যেভাবে চড়তে শুরু করেছে,তাতে আগামী ২৪ এর লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই রেশ ধরে রাখা খুবই কঠিন।