আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে তাঁরা অভিযোগ করেছেন, এই প্রকল্পের কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া আইন বিরুদ্ধ। সেই পরিকাঠামো রেশন ডিলারদের নেই। মামলাকারী ডিলারদের দাবি, আইন অনুযায়ী রেশন প্রাপক দোকানে এসে রেশন নেবেন এটাই নিয়ম। বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়ার জন্য ডিলারদেরই গাড়ির খরচ, প্রচারের খরচ এবং সংরক্ষণের খরচ বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে সরকার। এই বিপুল খরচ তারা বহন করতে পারবেন না বলে দাবি করেছেন ডিলারদের একাংশ।
advertisement
আদালতে তাঁদের আরও দাবি, এত লোকবল তাদের নেই। তাঁরা জানিয়েছেন, দিল্লিতেও এই ধরনের প্রকল্প আনার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাতে অনুমোদন দেয়নি। যদিও রাজ্যের তরফে পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলা হয়েছে, প্রাপকের সুবিধার্থে তারা আইন সংস্কার করতেই পারেন। এতে ডিলারের অধিকার ক্ষুন্ন হয় না।
তাছাড়া, রাজ্যের নির্দেশ মেনে চলতে ডিলাররা বাধ্য। পরিবহন এবং অন্যান্য খরচ বহন করতে সাহায্য করছে বলে দাবি রাজ্যের। আদালতে এদিন আরও জানানো হয়, এটা একটা পরীক্ষামূলক প্রকল্প, শুধু সেপ্টেম্বর মাসের জন্য। প্রকল্পের গ্রহনযোগ্যতা দেখে বাকি সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে।আগামীকাল মামলার ফের শুনানি রয়েছে। বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে হবে শুনানি।
বস্তুত এখন ডিলাররা কমিশন (Commission) পান প্রতি কুইন্টালে ৭৫ টাকা করে৷ ডিলারদের দাবি ছিল সব মিলিয়ে ২০০ টাকা কমিশন। সেটি হয়েছে আপাতত ১২৫ টাকা। তবে কমিশন বাড়লেও এখনও সন্তুষ্ট নন রেশন ডিলারদের সংগঠন (Ration Dealers Association)। তাছাড়া রেশন ঘরে ঘরে নিয়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে গাড়ি প্রয়োজন, তার অর্থ কে দেবে তা নিয়েও শুরু হয়েছে মতান্তর। রেশন ডিলার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু এ বিষয়ে জানিয়েছেন, "ব্যাঙ্ক থেকে ধার করা টাকায় গাড়ি কিনব না আমরা। প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচ করে রেশন ডিলারদের পক্ষে গাড়ি কেনা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।"
অপরদিকে, দুয়ারে রেশন প্রকল্প ভৌগোলিক কারণেই পাহাড়ের দুই জেলায় চালু করা হবে না। এমনকী সুন্দরবনের ব-দ্বীপের একাংশেও এ নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। যেখানেই পণ্য সরবরাহ করা হোক না কেন, পণ্য মেপে, ই-পস মেশিনে নথিভুক্ত করে তবেই তা দেওয়া হবে গ্রাহকদের। ডিলারদের একাধিক বক্তব্য থাকলেও রাজ্যের খাদ্য দফতর বলছে, আগে প্রকল্প শুরু হোক। তারপরই সমস্যা বোঝা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রী রথীন ঘোষ জানিয়েছেন, "মাঠে নেমে তো আগে কাজ করা শুরু হোক। তারপর তো সমস্যা বোঝা যাবে। শুধু সমস্যা দেখতে গেলে তো কোনও কাজই হবে না।" প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই রাজ্যের প্রায় ৩১০০ ডিলারদের নিয়ে চালু হবে দুয়ারে রেশন।
