কিশলয় রায় নামে এক ব্যক্তি তাঁর মাকে ভর্তি করেন মোহন ক্লিনিক নামে একটি ছোট হাসপাতালে। সেখানে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় ওই ব্যক্তি স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন। কমিশনের তরফে জানা গিয়েছে, অভিযোগ শোনার পর খুব একটা ভিত্তি পাওয়া যায়নি। যার কারণে প্রথম দিকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন: শহরের উড়ালপুল দেখভালের কড়া নির্দেশ মেয়রের, ছোটখাটো সাঁকোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
advertisement
জানা গিয়েছে, হাসপাতালের বিলে কিছু টাকা বেশি ছিল। অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার কথাও বলা হয় কমিশনের তরফে। কিন্তু এই সমাধানে খুশি হননি অভিযোগকারী কিশলয়বাবু। কিছুদিন পরই ওই ব্যক্তি তাঁর মাকে ভর্তি করেন ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে। কিশলয়বাবুর মা কোনওভাবে পড়ে যাওয়ায় তাঁকে আহত অবস্থায় সেখানে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর বিভিন্ন পরীক্ষা করার কথা বলেন। তাঁর মধ্যে একটি ছিল সিটি ব্রেন। সব কিছু ঠিকঠাক ছিল কিন্তু পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয় যে সিটি ব্রেন পরীক্ষা করা হয়েছে প্রায় ৩০ ঘণ্টা পরে।
এই ঘটনায় স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের তরফ থেকে তদন্ত করা হয়। তবে ৩০ ঘণ্টা পরে সিটি ব্রেন পরীক্ষা করলেও রোগীর কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। কিন্তু ৩০ ঘণ্টা পরে কেন পরীক্ষা করা হল তার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেনি হাসপাতাল।
আরও পড়ুন: মিলেনিয়াম পার্কে ঢুকতে গেলে লাগবে না কোনও প্রবেশমূল্য! কবে থেকে? বিরাট সিদ্ধান্ত পুরসভায়
এরপর এই বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন কিশলয় বাবু। সেখানে দেখা যায় সব কিছু মিলিয়ে হাসপাতালের তরফে প্রায় ২৫০০০ টাকা পাবে রোগীর পরিবার। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি রিভিউ অ্যাপ্লিকেশন জমা দেয়। সেখানে বলা হয়, ওই রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে যিনি মেডিক্যাল অফিসার (RMO) ছিলেন তিনি সিটি ব্রেন পরীক্ষাটি পরে করার নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রথমবার হাসপাতালের তরফে এরকম কোনও তথ্যই জানানো হয়নি। ফলে, এই রিভিউ কমিশনের তরফে খারিজ করা হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে জরিমানা করা হয়েছে অভিযোগকারী অর্থাৎ কিশলয়বাবুর থেকেও।
প্রথম হাসপাতালে যখন রোগীর পরিবারকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয় সেটা পছন্দ হয়নি ওই ব্যক্তির। ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালের ঘটনার পর ওই ব্যক্তি কমিশনকে একটি মেল পাঠিয়ে লেখেন, কমিশন তাঁর আগের অভিযোগকে ঠিক মতো মান্যতা দেয়নি। কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওই ব্যক্তি।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের অভিযোগ অত্যন্ত অবমাননাকর। ফলে কোনও ভাবেই কর্তৃপক্ষের তরফে এই ধরনের ব্যবহার অবমাননা বলে গণ্য করা হয়েছে। ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে এবং বলা হয়েছে অভিযোগকারী যেন নিজে এসে এই টাকা জমা দিয়ে যান। সঙ্গে তাঁকে একটি চিঠি দিতে হবে যেখানে লেখা থাকবে, ভবিষ্যতে তিনি আর এরকম অভিযোগ তুলতে পারবেন না কমিশনের বিরুদ্ধে। হাসপাতালের ক্ষতিপূরণও আপাতত স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ পেলে তবেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন কিশলয়বাবু।