তারপর থেকে বছরভর প্রেসিডেন্সি জেলেই দিন কাটছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর। গত একবছর ধরে বারবার জামিনের আবেদন জানালেও তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। যে কোনও শর্তে জামিনের কাতর আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে আদালত। এখন প্রেসিডেন্সি জেলই রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর বর্তমান ঠিকানা।
গত বছর ২২ জুলাই পার্থর বাড়িতে যখন হানা দিয়েছিল ইডি, তখনও অনেকেই জানতেন না, আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার হতে চলেছেন তৃণমূলের সেই সময়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী পার্থ। বা তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হতে চলেছে টাকার পাহাড়। যার চূড়ায় চূড়ায় পাওয়া যাবে শিক্ষা দফতরের নাম ছাপানো খাম, উচ্চ শিক্ষা দফতর সংক্রান্ত সরকারি নথি, স্কুল শিক্ষা দফতরের ডায়েরি এবং আরও অনেক কিছু। এরপরই ইডি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, গ্রেফতার করা হবে পার্থাবাবুকে। ইডি সূত্রে খবর, গ্রেফতার হবেন জেনে সেই সময় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিন বার ফোন করেন পার্থ, কিন্তু সেই ফোনের কোনও প্রত্যুত্তর পাননি মন্ত্রী।
advertisement
আরও পড়ুন: খোদ মমতার ‘সিলেকশন’, একুশের মঞ্চে সুপারহিট এই তরুণী! কে সে, কেনই বা নজরে?
এরপর ২৩ জুলাই সকালেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে সিবিআই। তবে তাঁর বিচারের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। এবার সেই অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বিচার প্রক্রিয়া যাতে কোনওভাবে বাধা না পায় তার জন্যই এই অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল। ভারতীয় সংবিধানের ১৬৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী নিজের সংবিধানিক অধিকারের জোরে এই অনুমোদন দিলেন রাজ্যপাল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় পূর্ণমন্ত্রী ছিলেন। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তখন রাজ্যপাল ছিলেন জগদীপ ধনখড়। তাই পার্থের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হলে বিধানসভার অধ্যক্ষের পাশাপাশি রাজ্যপালের অনুমোদনও প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বাংলায় ফের লাইনচ্যুত ট্রেন, খড়গপুরে রাতে মারাত্মক কাণ্ড! শিউরে ওঠা ঘটনা
২০২২ সালের ২৩ জুলাই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে। তার পর থেকে শুনানি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন পার্থবাবু। কিন্তু যখন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তখন তিনি ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। তাই বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজ্যপালের এই অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। সেই অনুমোদন এবার মিলে গেল। ফলে চার্জশিট পেশ করার পরে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে সাংবিধানিকভাবে আর কোনও বাধা রইল না। আগেও দেশের অন্যান্য রাজ্যে কোনও ক্যাবিনেট মন্ত্রীর বিচার প্রক্রিয়ায় রাজ্যপালের অনুমোদন দেওয়ার ঘটনা আছে।