যেমন কলকাতার পার্ক স্ট্রিটই ধরা যাক। আনলক হতেই এখানে আগের মতো খুলে গিয়েছিল ঝাঁ চকচকে রেস্তোরাঁ, দোকান, শপিং মল, ফুড জয়েন্ট। দোকানিরা বসে পড়েছিলেন আগের মতোই তাঁদের পসার সাজিয়ে। কিন্তু বসলেই তো হবে না। খদ্দের না-আসলে, বিকিকিনি না হলে ফি-দিন দেদার টাকা খরচে লাভ কোথায়! উল্টে ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর জোগাড়। অগত্যা সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ফের ঝাঁপ বন্ধের পথেই হাঁটছেন দোকান-মালিকেরা। কার্যত অলিখিত লকডাউনের পথেই হাঁটতে চলেছে পার্ক স্ট্রিট।
advertisement
তাবড় বড় বড় ব্র্যান্ডের শো-রুমের মালিকদের বক্তব্য, একে তো বিক্রি নেই। তার উপরে শো-রুমের ভাড়ার সঙ্গে গুণতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীদের বেতন-সহ আরও কত কিছু। লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতির হিসেব বাড়িয়ে যাওয়ার চেয়ে দোকান আরও কিছুদিন বন্ধ রাখাই ভাল।
এক দোকানদার তো আবার রাখঢাক না করে বলেই ফেললেন, "পার্কস্ট্রিটে যত রাত বাড়ে, তত জীবন আরও রঙীন হয়ে ওঠে। এখন তো রাতে কার্যত দোকানের ঝাঁপ ফেলে দিতে হচ্ছে। স্কুল কলেজ পড়ুয়ারাও বাড়িতে। তাই আমাদেরও কপালে শুধুই লোকসান।"
দোকান মালিক মুকেশ সাঙ্ঘভির কথায়, "সকাল থেকে অনেক দোকানই খুলছে। তবে বিক্রি-বাটা একেবারেই নেই। তাই প্রাপ্তি, স্যামসোনাইট, নেক্সা-র মতো অনেক বড় বড় ব্র্যান্ডই শো-রুম বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
অর্থনীতিবিদেরা অবশ্য এর দায় চাপাচ্ছেন করোনা হামলায় আর্থিক বিপর্যয়ের উপরেই। এই বিপর্যয়ে কারও চাকরি গিয়েছে, কেউ বা বেতন কম পাচ্ছেন। এই অবস্থায় কেউই প্রয়োজনীয় জিনিসের বাইরে অন্য কিছু কিনতে চাইছেন না।
অর্থনীতিবিদ প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, "অর্থনীতির পক্ষে এটা খুবই খারাপ ঝোঁক। বিক্রি একেবারে নেই। কেউ চাকরি হারিয়েছেন। কেউ বা আগের থেকে অনেক কম রোজগার করছেন। তাই এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষ বিলাসিতায় খরচ করার অবস্থায় নেই।"
আনলকেও তাই মুড অফ করে একলা, সুনসান দাঁড়িয়ে রয়েছে পার্ক স্ট্রিট।
SHALINI DUTTA