১১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজ্যে শুরু হয়েছে দিদির সুরক্ষা কবচ' এর কর্মসূচি। যদিও, কর্মসূচির যে দিনক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তার ভিত্তিতে আগামী ১৪ জানুয়ারি থেকে পুরোদমে জেলায় জেলায় যাওয়া শুরু করবে দিদির দূতরা। আর, এই কর্মসূচি শেষ করতে হবে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। এরই মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে রাজ্য বাজেট। সেই হিসাবে মার্চে 'রেজাল্ট আউট' এর সম্ভবনা। সূত্রের মতে, এই কর্মসূচি শেষ না হওয়া পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোটের সম্ভবনা নেই বললেই চলে।
advertisement
২১ এর বিধানসভা ভোটের আগে খেলা হবে স্লোগান দিয়ে রাজ্যে বিজেপির খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছিল তৃণমূলের 'দিদিকে বলো আর দুয়ারে সরকার। মমতার কৌশলে বিফলে গিয়েছিল বিজেপির যাবতীয় গেম প্ল্যান। কিন্তু, এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে একাধিক দুর্নীতির দায়ে জেরবার শাসক দলের কাছে আবাস দুর্নীতি গোঁদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো অবস্থা। এই আবহে রাজ্যবাসীর জন্য রাজ্য সরকারের সুরক্ষার ঝাঁপি নিয়ে দুয়ারে দুয়ারে যাবে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপির সিদ্ধান্ত বদল! তৃণমূলের জন্য বন্ধ 'দরজা' খুলল পদ্ম শিবির, সুকান্তর মন্তব্যে শোরগোল
দলের এক বর্ষীয়ান নেতার মতে, '' উদ্দেশ্য একটাই, বঞ্চিত মানুষের মনে জমে থাকা ক্ষোভকে কৌশলে উগরে দেওয়ার সুযোগ করে দিয়ে ভোটের বাক্সকে সুরক্ষিত রাখা। গ্রাম বাংলায় গরীব মানুষের কাছে এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। সুরক্ষার প্রশ্নে তাই তাদের কাছে দিদিই শেষ কথা। পঞ্চায়েতের আগে, দলের ওপর নীচু তলার মানুষের আস্থা ফেরাতে এই কর্মসূচির বিশেষ গুরুত্ব রয়ছে।''
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে শহরে পা রাখলেন বিরাট, ইডেনে কিং কোহলির জন্যই টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দিদির সুরক্ষা কবচ আসলে পঞ্চায়েতে 'তৃণমূলের রক্ষাকবচ'। সে কারণে হিসেব মতো ফেব্রুয়ারিতে এই কর্মসূচি শেষ হলে, রাজ্যের জেলায় জেলায় তার কী প্রভাব পড়ল, তা খতিয়ে দেখে পঞ্চায়েতের চূড়ান্ত গেমপ্ল্যান স্থির করবে শাসক দল। একই সঙ্গে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, আই সি এস সি, সি বি এস সি, পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন করা যাবে না। এই দিনক্ষণ মাথায় রাখলে মার্চ মাসের শেষ বা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের পর ভোটের কথা ভাবতে পারে রাজ্য সরকার৷
ভোটের দিনের বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, ''আসন ও পদের সংরক্ষণ এবং সীমানা পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে৷ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা ধরে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বুথ ভিত্তিক ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শীঘ্রই শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হবে জেলা প্রশসনকে। সেই কাজ শেষ হলে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট স্থির করবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২৪ দিন পরে ভোট গ্রহণ সম্ভব।''
যদিও, পঞ্চায়েত ভোটের ওবিসি সংরক্ষণ তালিকা নিয়ে মামলা হয়েছে আদালতে। আইনি জটে আটকে না গেলে এপ্রিলে ভোট সম্ভব বলেই মনে করে কমিশন। কিন্তু, যেহেতু পঞ্চায়েত ভোট কবে হবে তা নির্ভর করে রাজ্য সরকারের ওপর, তাই দিদির সুরক্ষা কবচের 'রেজাল্ট ' আশানরূপ হলে দ্রুত পঞ্চায়েত ভোট সেরে ফেলতে চাইবে সরকার। এমনটাই মনে করছে দলের একাংশ।