আরও পড়ুন:দেশে রোজ বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা, অঙ্ক পৌঁছে গেল ৩৫-এ, অন্ধ্র ও চণ্ডীগড়ে আতঙ্ক
১০ ডিসেম্বর সকালে ব্রিটেন থেকে আসা এক তরুণীর শরীরে মেলে করোনাভাইরাস! শুক্রবার রাত আড়াইটের সময় তিনি ব্রিটেন থেকে দোহা হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন। রাত সাড়ে তিনটের সময় হিন্দল্যাব থেকে তাঁর করোনা রিপোর্ট এলে দেখা যায় তরুণী কোভিড পজিটিভ (Omicron Panic In Kolkata)। তরুণীকে ভর্তি করা হয় দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, তরুণীর মধ্যে করোনার খুব মৃদু উপসর্গ রয়েছে। প্রথমে তরুণীকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । ওমিক্রন আক্রান্তদের জন্য (২৫ জন মহিলা এবং ২৫ জন পুরুষ) হাসপাতালে যে বিশেষ ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে, সেখানেই আইসোলেশনে রাখা হয় দোহা ফেরত তরুণীকে। পরে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে।
advertisement
ওমিক্রণ সংক্রমন পরীক্ষার জন্য তরুণীর জিনসজ্জা বা জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে দেখা হয়। লালারসের নমুনা পাঠানো হয় কল্যাণীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জেনোমিকসে। আজ,, সোমবার জিনোম সিকোয়েন্সইং-এর রিপোর্ট এলে দেখা যায় তরুণী ওমিক্রন নয়, কোভিডের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত।
আরও পড়ুন:কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নতুন তিন আক্রান্তের খোঁজ, দেশে মোট ৩৮ জনের শরীরে ওমিক্রন
CMRI- এর পালমোনোলজিস্ট রাজা ধর জানান, '' তরুণী ওমিক্রন সংক্রমিত নন, এতে উল্লসিত হওয়ার কারণ নেই আবার কোভিডের ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ারও কারণ নেই। মূল কথা হল, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসে গোটা দেশেই কোভিডের ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস প্রজাতির সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। আমরা সেটা অনেকটাই প্রতিহত করতে পেরেছি। কিন্তু আরও সাবধান হতে হবে। মাথায় রাখতে হবে ওমিক্রন খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে, এটি খুব সংক্রামকও।''
একই মত SSKM-এর চিকিৎসক দিপ্তেন্দু সরকারেরও, '' তরুণী ওমিক্রণ আক্রান্ত নন, এতে স্বস্তি মিলেছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের খুব সাবধানে, কঠোরভাবে কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে।''
তবে, বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ওমিক্রন সন্দেহে চিকিৎসাধীন বারাসাতের বৃদ্ধের রিপোর্ট এখনও আসার অপেক্ষায়। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের (Suspected Omicron Infected Man From Barasat) বাসিন্দা ৭৬ বছরের বৃদ্ধ বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন। গত ৯ ডিসেম্বর তাঁর করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় লালা রসের নমুনা কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট করোনা পজিটিভ আসে । এর পর গভীর রাতে ওই বৃদ্ধকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
আতঙ্কের নতুন নাম ওমিক্রন। দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার পর্যন্ত দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৩। রবিবার তা বেড়ে হয়েছে ৩৫। নতুন করে দু'জনের শরীরের ওমিক্রন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এদের এক জন অন্ধ্রপ্রদেশ, অন্যজন চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা। অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দার বয়স ৩৪ বছর, তিনি আয়ারল্যান্ড থেকে মুম্বই হয়ে ভাইজ্যাগে এসেছিলেন, গত ২৭ নভেম্বর তাঁর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। দ্রুত লালারস জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠান হয়। তাঁর শরীরে মেলে ওমিক্রন সংক্রমণ। অন্ধ্রপ্রদেশে এটিই প্রথম ওমিক্রন সংক্রমণের ঘটনা। এখনও পর্যন্ত সে রাজ্যে ১৫ জন বিদেশ ফেরত যাত্রীর শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এদের সকলের নমুনাই পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বছর ২০-র চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা ইতালি থেকে দেশে ফিরেছিলেন ২২ নভেম্বর। ডিসেম্বরের ১১ তারিখে তাঁর শরীরে করোনা ধরা পড়ে। পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁর শরীরে ওমিক্রন প্রজাতি আক্রমণ করেছে।