দিলীপ চট্টোপাধ্যায়, দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে প্রতিমা নিরঞ্জন করতে আসেন। জলে ঠাকুর পড়ার পরেই মিষ্টিমুখ, কোলাকুলিতে মেতে ওঠেন। এবার যদিও তিনি ঘাট পর্যন্তই পৌঁছতে পারেননি। কারণ নিয়মানুযায়ী, নিরঞ্জন স্থান অবধি মাত্র দু'জনকেই যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। নিরঞ্জন সম্পূর্ণ করার পরেও সদস্যদের একত্রিত হওয়ার নেই কোনও সুযোগ। ফলে এবারে কোলা-কুলি'তে নো-এন্ট্রি। দিলীপবাবু জানাচ্ছেন, আগে কখনও এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। এটাই তো বাঙালিদের দস্তুর। কোলাকুলি করা গেল না এবছর। তবে হাত তুলে প্রণাম হচ্ছে। এবছর তো কিছু করার নেই। আশা করছি আগামী বছর আবার দশমীর কোলাকুলি হবে।
advertisement
একই অভিজ্ঞতা যাদবপুরের মৃণ্ময় রায়ের। তিনিও জানাচ্ছেন, "আমাদের যৌথ পরিবার। সেখানে দশমীতে দাদা-ভাই বা বয়জ্যোষ্ঠদের দশমীর দিনে কোলাকুলি করা হয়। এবছর এসব কিছুই হল না।" মন খারাপের সুর থাকলেও, অনেকে অবশ্য এই নয়া নিয়ম মেনে নিয়েছেন অনেকেই। যেমন সৌরজ্যোতি মুখোপাধ্যায়। কলেজ পড়ুয়া ছেলে জানাচ্ছে, এক বছর ঐতিহ্য না মানলে কিছু খারাপ হবে না। তবে অসুস্থ হলেই একাধিক মানুষের অসুবিধা হবে। এই বক্তব্যে সহমত পোষণ করলেন, অজয় রায়। তিনিও জানাচ্ছেন, পুজোর সময় সবাই একসাথে মিলিত হই। আমরা অনেকেই বাইরে থেকে আসি। ফলে কেউ সংক্রামিত হলে অনেকের ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই কোলাকুলি না হওয়ায় মন্দ কিছুই হয়নি। এভাবেই পুজো মেটার পরে বাঙালির চিরন্তন কোলাকুলি নিয়ে ভিন্ন মত উঠে এসেছে। তবে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, আক্ষেপ অবশ্যই একটা থাকছে। তবে আগামী বছর সব মিটিয়ে নেওয়া হবে। আনন্দ হবে দ্বিগুণ। ফলে আক্ষেপ থাকলেও, আশায় রয়েছে বাঙালি।
Abir Ghoshal