মঙ্গলবার জল সরবরাহ বিভাগের ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার অমিতাভ পালের নেতৃত্বে কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে যৌথ পরিদর্শন হয় । কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে পুজো উদ্যোক্তাদের বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন মহম্মদ আলি পার্কের পুজো উদ্যোক্তা অশোক ওঝা । তিনি জানান, কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে তাঁদের একটা বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রস্তাব নিয়ে আয়োজকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই সিদ্ধান্তের কথা পুজো উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
advertisement
অন্যদিকে স্থানীয় কাউন্সিলর ও বরো চেয়ারপার্সন রেহানা খাতুন জানান, মহম্মদ আলি পার্কের পুজো, পার্কের মধ্যেই হবে। তবে বিকল্প চিন্তা ভাবনা করেই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিপদজনক জলাধারে কে রক্ষা করে যাতে পার্কের মধ্যে পুজো করা যায়, পুরসভার সঙ্গে সহযোগিতা করে সেভাবেই পুজো করা হবে।
আরও পড়ুন : পুজোর অনুদান ঘোষিত হতেই তীব্র কটাক্ষ বিরোধীদের, প্রশ্ন, বকেয়া ডিএ কবে দেওয়া হবে
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে মহম্মদ আলি পার্কের তলায় একটা ব্রিটিশ আমলের সেমি আন্ডারগ্রাউন্ড জলাধার রয়েছে। যেখানে প্রায় ৪০ লক্ষ গ্যালন জল ধরে । এর থেকে প্রায় ৩ লক্ষ বাড়িতে জল সরবরাহ করা হয়। শুধু তাই নয় দীর্ঘদিনের এই জলাধারের উপরের জমির অবস্থা খুব একটা ভাল নেই বলেই মনে করছে কলকাতা পুরসভা। তাই তারা আগেই পুজো উদ্যোক্তাদের সতর্ক করেছে। কোনও রকমের দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় মহম্মদ আলি পার্কের পুজো উদ্যোক্তাদের নিতে হবে বলে নোটিসে পরিষ্কার উল্লেখ করেছেন তাঁরা।
এদিকে এরই মধ্যে মহম্মদ আলি পার্কের মূল চত্বরে তৈরি করে ফেলা হয়েছে মণ্ডপের মূল কাঠামো । তবে যে জায়গায় এই মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে, সেই জায়গায় যদি অতিরিক্ত দর্শনার্থীদের ভিড় হলেই একটা বড় বিপদ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে । তাই পুর কর্তৃপক্ষ সেই জায়গায় সবুজ সংকেত দিতে নারাজ। বরং তাঁরা একটা বিকল্প জায়গার প্রস্তাব দিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তাদের।
পুরনো মণ্ডপ যার মাপ প্রায় ৫০ ফুট ছিল, সেটা আরও এগিয়ে নিয়ে এসে রাস্তার সামনে একেবারে লোহার গ্রিলের সামনে নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছে কলকাতা পুর সংস্থা । মাত্র ১৫ ফুটের মধ্যে এই মহম্মদ আলি পার্কের পুজো মন্ডপের পরিসর সীমিত রাখার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। তবে প্রশ্ন উঠছে যে বিকল্প জায়গার প্রস্তাবের ফলে মহম্মদ আলি পার্কের পুজোর ভিড় কমে যাবে না তো?
আরও পড়ুন : লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেক কম! রাজ্যে ‘চোখের আলো’ প্রকল্পের সরকারি তথ্য যথেষ্ট উদ্বেগজনক
কিন্তু প্রাচীন জলাধারের উপরে কোনও মতেই দর্শনার্থীদের মণ্ডপ দেখার অনুমতি না দেওয়ার পক্ষে কলকাতা পুরসভা। তাই সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে যাতে পুজো দেখে ফিরে যেতে পারেন দর্শনার্থীরা, সেভাবেই মণ্ডপসজ্জা করার প্রস্তাব দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। কারণ তাদের মতে, বিপন্ন জলাধার বাঁচাতে জলাধারের উপরে কোনওভাবেই মন্ডপসজ্জা নয় । সামনের দিকে পার্কের রেলিং-সহ ৫ ফুট এবং পরবর্তী জলাধারের আগে ১০ ফুট জায়গা আছে । এই ১৫ ফুটের মধ্যেই মণ্ডপকে সীমাবদ্ধ রাখতে প্রস্তাব দিয়েছে পুরসভা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পরের বছর পার্কেই পুজো করতে চাইছেন ইউথ অ্যাসোসিয়েশনের বেশিরভাগ সদস্য। তাই তাঁদের মতে পুরসভার প্রস্তাব মেনেই এ বছরের দুর্গাপুজো করার পক্ষপাতী সদস্যদের বেশিরভাগ অংশ । এই পরিস্থিতিতে কলকাতার পুরসভার কাছে বুধবার মহম্মদ আলি পার্ক পুজোর উদ্যোক্তা ইউথ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কী বার্তা যায়, সেটাই দেখার।