সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা দীর্ঘ পোস্ট তিনি করেছেন৷ আর সেখানেই জানিয়েছেন, “দলের দিকে তাকিয়ে দেখব আর একটা দুটো দিন। সঠিক বিচার না পেলে তারপর দলমত নির্বিশেষে সমস্ত সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করব বলাগড় বাঁচাও, দুস্কৃতি হঠাও জনজাগরন আন্দোলন। তৈরি থাকুন! সতেরোটা অঞ্চল জুড়ে পদযাত্রা করব। থানার সামনে, বিডিও আফিসের সামনে বিক্ষোভ হবে, হবে প্রতীকী চাক্কা জ্যাম। এটাই আমার সেই এস্পার ওস্পার লড়াই হবে।”
advertisement
এছাড়াও তাঁর পোস্টে মনোরঞ্জন ব্যাপারী জানিয়েছেন, “যাঁর বিরুদ্ধে আমার মুখ খোলার কথা ছিল সেই বালি মাফিয়া মাটি মাফিয়া জুয়ার বোর্ড চালানো, গাঁজার পাঁচারকারী, গরু ব্যাবসায়ী আমার কাছে ছবি তোলা আছে খামারগাছি ঘাটে গরু নিয়ে যাবার সময়ে ওই ফুলন দেবীর স্বামী- আমাদের মাননীয়া দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগানো গাড়ি নিয়ে গিয়ে তাদের হুমকি দিয়ে টাকা তুলছে। দল চাইলেই সে ছবি আমি পাঠিয়ে দেব। হরেক রকমের দুর্নীতিকারীদের সহায়ক- তাঁরা আমাকে হুমকি দিয়েছিল “কী করে বিধায়ক কার্যালয়ে বসে ফেসবুক লাইফ করি” দেখে নেবে! সত্যিই দেখে তাঁরা নিয়েছে। রাত বারোটার সময়ে বিধায়ক কার্যালয় ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে দিয়েছে। সঙ্গে এক পঞ্চায়েত সদস্যার ঘর বাড়ি সেও ভেঙ্গে দিয়েছে। বেধরক মারা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। তাঁর পাঁচ বছরের বাচ্চাকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে শক্ত উঠোনের মাটিতে। ছুড়ে আর ছিড়ে ফেলা হয়েছে আমাদের দিদি মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। ধুলোয় ফেলে পা দিয়ে মাড়ানো হয়েছে দলীয় পতাকা। এটা দলের মুখে একটা সজোর চপেটাঘাত।”
মনোরঞ্জন ব্যাপারী লেখেন, “কোনও দলীয় কর্মীর পক্ষে এটা সহ্য করা কঠিন। ক্ষুব্ধ যে সব মানুষ গতকাল আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাদের বলছি, আপনার ক্রোধ রাগ একটু সংযত রাখুন। ওঁরা ভাঙচুর করেছে বলে আপনারাও তাই করবেন- সেটা অনুচিত হবে। আমাদের ক্রোধ আমরা অনুশাসিত প্রশিক্ষিত সৈনিকের মতো প্রয়োগ করবো। উছৃংখল গুন্ডাদের মতো নয়। যারা এই সব করেছে তাঁরা দলের ভাল চায় না । তাঁরা আমাদের ক্ষতি করতে বদ্ধ পরিকর।”
কারা তাঁর বাড়ি ভেঙেছে সদস্যা তাদের নাম ধরে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। কিন্ত এখনও অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়নি। দলীয় কার্যালয় ভাঙা হল দলীয় সদস্যকে মারা হল -ঘর দুয়ার ভাঙা হল অথচ দল তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এ থেকে বোঝা যায় তাঁরা কত শক্তিমান! কী ভাবে বলাগড় জুড়ে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে-যে সবাই তাদের ভয় পাচ্ছে!
তবে বন্ধুরা যে যতবড় শক্তিমান হোক – সবার চাইতে বড় জনগন। জনগনের শক্তি সাহস একতার সামনে বড় বড় শাসকের দম্ভ বালির ঘরের মতো ধ্বসে পড়েছে আর এরা তো চূনোপুটি। আমি দলের এক অনুগত সৈনিক, দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্ধভক্ত। আবারও বলছি- “অন্ধভক্ত” । দিদির আদেশ আমার কাছে ‘ভগবানের’ আদেশ। বিধায়ক পদ তো অতি তুচ্ছ যদি দিদি বলেন তারচেয়ে যদি বড় কিছু থাকে তাও তাঁর আদেশে এক মুহূর্তে বিসর্জন দিতে দুবার ভাবব না।”
তবে আশার কথা যে সেখানে উপস্থিত জনা তিরিশ নেতা কর্মী কেউ তাঁর কথায় সহমতি জানায়নি। সবাই তাঁর বিরোধ করেছে । ধিক্কার দিয়েছে। তাই সেই মানুষ- সেই ভোটার সেই দিদির প্রতি অনুগত , যুবনেতা অভিষেক `বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি অনুগত মানুষ, যারা আমার সঙ্গে আছেন তাদের ওই ফুলন দেবী আর তাঁর স্বামী, কিছু পোষা গুণ্ডা, তাদের সামনে- সেই হিংস্র হায়নার সামনে ফেলে কিছুতেই পালাব না। আমি লড়ছি আর আগামী দিনেও অবশ্যই লড়াই করব।
একটা বড় আশ্চর্যের কথা -আমি ওই ফুলন দেবীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলাম- সে এক স্কুলে অবৈধভাবে কী করে চাকরি পেয়েছে? কে তাঁকে কী পেয়ে চাকরি দিয়েছে? সেটা তদন্ত করে দেখা হোক। কী ভাবে বছরের পর বছর ডিউটি না করে মাইনে নিয়েছে খতিয়ে দেখা হোক। শুধু এটাই নয় আমি তাঁর নামে যে যে অভিযোগ তুলেছি সবকিছু তদন্ত করে দেখা হোক। আর হ্যাঁ ওঁরা আমার নামে যা যা বলছে তারও তদন্ত হোক। সেটা নিয়ে কেউ কিন্ত কিছু বলছে না! কেন? আর কেন?”