এ দিন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চে মানিক ভট্টাচার্যের মামলাটি ওঠে৷ ইডি-র তরফে সওয়াল করতে গিয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা অভিযোগ করেন, মানিক ভট্টাচার্য তদন্তে অসহযোগিতা করছেন, তথ্যও লুকিয়েছেন তিনি৷ তাঁর পরিবার এবং পরিজনদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও বেআইনি টাকার লেনদেন হয়েছে৷ মানিক ভট্টাচার্যের ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে আর্থিক অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে ইডি৷ এর পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে যে ৬১ জন চাকরিপ্রার্থীর তালিকা মিলেছিল, তার মধ্যে ৫৫ জনকে বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়া হয় বলে শীর্ষ আদালতে জানায় ইডি৷
advertisement
আরও পড়ুন: বড় খবর! মানিককে প্রাথমিক পর্ষদ সভাপতি পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত সাময়িক স্থগিত, বলল আদালত
বিচারপতিদের ইডি-র পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, কেস ডায়েরি দেখার পর কলকাতার ইডি-র বিশেষ আদালত মানিকের ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়৷ সুপ্রিম কোর্টে মানিকের আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা নেই বলে দাবি করে তুষার মেহতা যুক্তি দেন, গ্রেফতারি থেকে রেহাই চাইলে মানিককে ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে নিম্ন আদালতে আবেদন করতে হবে৷
যদিও ইডি-র বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ আনেন মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী মুকুল রোহতগি৷ তিনি দাবি করেন, এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির দিন যে টাকা, সোনা উদ্ধার হয়, তা মানিকের বলে দেখানোর চেষ্টা করছে ইডি৷ মানিকের গ্রেফতারিকে অবৈধ বলে দাবি করে তাঁর আইনজীবী আরও দাবি করেন, সিবিআই-এর যে মামলায় মানিককে সুপ্রিম কোর্ট রক্ষাকবচ দিয়েছে, সেই মামলাতেই নথিকে ঢাল করেই মাানিকের বিরুদ্ধে মামলা সাজিয়েছে ইডি৷ অথচ একমাত্র ২৬৯ জনের বেআইনি নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ বাদ দিয়ে মানিকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই বলেও দাবি করেন মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবী৷
আরও পড়ুন: ‘রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছে’, আন্দোলন নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে পর্ষদ সভাপতি
ইডি-র তরফে অবশ্য এর পাল্টা যুক্তি দিয়ে তুষার মেহতা বলেন, মানিকের আইনজীবী ইচ্ছাকৃত ভাবে ইডির তল্লাশি এবং বেআইনি ভাবে চাকরি প্রাপকদের তালিকা উদ্ধারের বিষয়টি বাদ দিতে চাইছেন৷ মানিকের ছেলের সংস্থার বিরুদ্ধেও ৫৩০টি কলেজ থেকে আপগ্রেডেশনের নামে মোট ২.৬৪ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে৷ যদিও টাকা নিলেও শৌভিকের সংস্থা ওই কলেজগুলিকে কোনও পরিষেবা দেয়নি বলেও আদালতে জানায় ইডি৷
দু' পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রায় দান স্থগিত রাখে৷ ফলে মানিককে আপাতত ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে৷