ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রতিটি গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনের ক্ষেত্রেই নিজের মন্ত্রিসভার এই প্রবীণ সদস্যের উপরে ভরসা করতেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী বলে নয়, প্রশাসক হিসেবে সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতার জন্যই গঙ্গাসাগর মেলার মতো মহাযজ্ঞের যথাযথ আয়োজনের গুরুদায়িত্ব সুব্রতদার হাতে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতেন মমতা। সঙ্গে অবশ্য় অন্যান্য বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও থাকতেন। কিন্তু মূল দায়িত্ব থাকত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের উপরেই। প্রতি বছরই তাঁর প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর এই আস্থার মর্যাদা রাখতেন সুব্রতবাবু।
advertisement
আরও পড়ুন: গঙ্গাসাগর নিয়ে ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা? 'স্টোভ-বন্দুক' নিয়ে সতর্কতার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
যদিও প্রবীণ রাজনীতিকের মৃত্যুতে এ বছরের গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনে চিন্তা বেড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। এ দিন গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বদলে এবার রাজ্যের আর এক প্রবীণ মন্ত্রীর উপরে আস্থা রাখছেন তিনি। মমতা জানিয়েছেন, এবার গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজনের তদারকির মূল দায়িত্বে থাকবেন রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মেলার প্রস্তুতি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সুব্রতদা আগে ওখানে যেতেন, এখন নেই। সুব্রতদার জায়গায় এবার শোভনদা থাকবেন।'
আরও পড়ুন: ৩০ ডিসেম্বর একমঞ্চে মোদি-মমতা, নবান্ন সভাঘরে বড় ঘোষণা
আগামী ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে গঙ্গাসাগর মেলা। চলবে ১৭ তারিখ পর্যন্ত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় অন্তত ৩০ লক্ষ মানুষের সমাগম হবে বলে তিনি মনে করছেন। তিনি নিজেও একদিন মেলার প্রস্তুতি দেখতে যাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য়কেও মেলা চলাকালীন গঙ্গাসাগরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পুলিশের সিনিয়র অফিসারদেরও মেলায় পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলার সুষ্ঠু আয়োজন থেকে নিরাপত্তায় তিনি যে কোনও ফাঁক চান না, তা এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর একাধিক বার তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজোর উদ্বোধনে গিয়েও স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করতে গিয়েও প্রিয় সুব্রতদার অভাব অনুভব করছেন মুখ্যমন্ত্রী।