সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের জয়ের পর পরই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, তাতে অন্তত সেই সম্ভাবনাই জোরাল হয়েছে৷ সাগরদিঘির ফল ঘোষণার পর পরই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন৷ স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, তৃণমূল একাই একশো৷ কংগ্রেস, সিপিএমের হাত তৃণমূল আর ধরবে না৷
আরও পড়ুন: হারলেন দুই রাজ্য সভাপতি, নির্বাচনে বিজেপির মুখরক্ষা করলেন নাগাল্যান্ডের তেমজেম
advertisement
সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রটি ২০১১ সাল থেকে তৃণমূলের দখলে ছিল৷ ২০২১ সালেও এই কেন্দ্রে পঞ্চাশ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিল শাসক দল৷ অথচ সেই কেন্দ্রেই অপ্রত্যাশিত হারের মুখ দেখতে হল ঘাসফুল শিবিরকে৷
এতেই প্রবল ক্ষুব্ধ হন তৃণমূলনেত্রী৷ সাগরদিঘিতে হারের জন্য বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি-র অনৈতিক জোটকে দায়ী করেন তিনি৷ ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা কাউকে দোষ দিচ্ছি না৷ কিন্তু ওখানে অনৈতিক জোট হয়েছে৷ আমরা এর নিন্দা করছি৷ বিজেপি-র ফল দেখলেই বুঝতে পারবেন যে ওদের ভোট কংগ্রেসে গিয়েছে।'
এর পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২০২৪ সালে বিরোধী জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়৷ জবাবে রাখঢাক না করেই তৃণমূলনেত্রী জানিয়ে দেন, আমরা মানুষের সঙ্গে জোট করব৷ যারা বিজেপি-র সাহায্য নেয়, সেই সিপিএম, কংগ্রেসের হাত আণরা ধরব না৷ আমরা একাই একশো৷ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও আমরা এই তিন শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম৷'
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে বিজেপি-র উত্থানের জন্য বামেদের প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক শোনা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়৷ বামেদের শক্তিক্ষয় নিয়ে বিধানসভাতেও হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে৷ ২০২১-এর নির্বাচনেও বিজেপি-র শক্তিবৃদ্ধির জন্য বামের ভোট রামে যাওয়ার তত্ত্ব তুলে ধরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রাম-বাম সমঝোতার অভিযোগেও সরব হয়েছিলেন তিনি৷
আরও পড়ুন: সাগরদিঘিতে বড় হার, তার পরেও অধীরকে 'ধন্যবাদ' জানালেন মমতা!
অন্যদিকে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোট নিয়ে আলোচনা চললেও তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কের ক্রমাগত অধঃপতন সেই জোটের পথে মূল অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোটে আপত্তি রয়েছে তৃণমূলের৷ আবার তৃণমূল যেভাবে গোয়া, ত্রিপুরা, মেঘালয় সহ একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসে ফাটল ধরিয়েছে, তাতে ক্ষুব্ধ রাহুল গান্ধিরা৷
মেঘালয়ের ভোট প্রচারে গিয়েও রাহুল গান্ধি অভিযোগ করেছেন, গোয়া, মেঘালয়ের মতো রাজ্যে বিজেপি-কে সাহায্য করতেই ভোটে লড়ছে তৃণমূল৷ এই আবহেই সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের জয় দুই দলের সম্পর্ককে যে আরও তলানিতে নিয়ে যাবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ ফলে সাগরদিঘির উপনির্বাচনের পর বিরোধী জোটের পরিকল্পনায় ইতি পড়ল কি না, তা হয়তো আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে৷