এদিন আরও একবার স্পষ্ট গলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ CAA, NRC আমরা মানব না। আমি আধার কার্ড বাতিল নিয়ে যেই চেপে ধরতে শুরু করলাম ওরা বন্ধ করে দিল। আমি আমার বাবা-মায়ের জন্মদিন জানি না৷ তো বার্থ সার্টিফিকেট কী করে নিয়ে আসব? মানুষ কে হ্যারাস করা আমাদের লক্ষ্য নয়। তাই আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে।’’
advertisement
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আরও একবার তুলোধনা করে মমতা বলেন, ‘‘সারা বিশ্বজুড়ে আপনারা দেখেছেন কী নিয়ম আছে। কী ভাবে তারা সিটিজেন কার্ড দেয়। বিল পাস হয়েছে ৪ বছর আগে। আমি রুল দেখে সন্তুষ্ট নয়। অসমের মুখ্যমন্ত্রীও বলেছে এটাতে কোনও লাভ নেই। এটা একটা ছাপ্পা, ভাপ্পা। কিন্তু, আমরা মানুষের অধিকার নিতে দেব না৷ কাল কে বলেছে কিছু, কারা হবে না, সেটা আইনে নেই কেন? এটা পলিটিক্যাল গিমিক শুধু। নির্বাচনের আগে কয়েকটা আসন পাবে তাই করছে৷ এটা মানুষকে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। তাই যেটা আতঙ্ক সৃষ্টি করে সেটা আমরা প্রতিবাদ করছি। আমি শুধু এটা বলব caa এর সঙ্গে nrc-এর সম্পর্ক আছে।’’
এদিন, নিজের ছোট ভাই স্বপন ওরফে বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতেও সরব হন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ লোকসভা নির্বাচনের টিকিট পাওয়া নিয়ে এবার কোন্দল শুরু হয়েছিল খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘর’ থেকেই৷ হাওড়ায় প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করা নিয়ে জনসমক্ষে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন বাবুন৷ রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘যে মানুষটা হাওড়ায় প্রার্থী হয়েছেন, সেই প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় মোহনবাগান ক্লাবের এজিএমের সময় আমাকে গলাধাক্কা দিয়েছিলেন৷ আমাকে অপমান করেছিলেন৷ হাওড়ার মানুষ ওঁকে মেনে নিচ্ছেন কি না জানি না৷ এই প্রার্থী ঠিক হয়নি৷’’
এরপরেই, রাজনৈতিক মহলে হাওয়া ওঠে, হাওড়া থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন স্বয়ং মমতার ভাই বাবুন৷ তা না হওয়াতেই তিনি দিল্লি পাড়ি দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর৷ যদিও আরেক অংশ দাবি করে, তিনি নির্দল হিসাবেই হাওড়া থেকে লড়বেন৷
এই সমস্ত জল্পনার মাঝেই এবার বাবুনকে নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে দেখা গেল তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ এদিন শিলিগুড়ি থেকে ভাইকে নিয়ে তীব্র উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা৷ বলেন, ‘‘আমি যেদিন থেকে পার্টি করি কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে কাজ করি। আমার পরিবার বলে কিছু নেই। আমার পরিবার সবার পরিবার। আমাদের কেউ এইরকম নয়। বড় হলে অনেকের লোভ একটু বেশি বেড়ে যায়। আমার পরিবারে বাবুন বলে কেউ আছে বলে মনে করি না। বাবুনের সঙ্গে সব সম্পর্ক আমার শেষ। আমার ভাই হিসাবে কেউ পরিচয় দেবে না।’’
এরপরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের পরিবারে ৩২ জন সদস্য। কেউ এইরকম করে না৷ প্রসূন ব্যানার্জি একজন অর্জুন পুরস্কার জয়ী। এর আগেও অনেক ইলেকশনে আমাকে সমস্যা করেছে। তখন হয়ত রাজনীতিটা করতাম বলে, আমি ওকে হয়ত মানুষ করতে পারিনি। বিজেপি সব সময় ঘর ভাঙার খেলা করে৷ আমি পরিবারতন্ত্র করি না। আপনাদের জলজ্যান্ত উদাহরণ দিয়ে দিলাম। ’’
অন্যদিকে, সর্বসমক্ষে সমস্ত ‘সম্পর্ক’ ছিন্ন করার বার্তা দিতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দেন স্বপন ওরফে বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘আমি নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই। আমি বিজেপিতে যাচ্ছি ফেক নিউজ। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথেই আছি। চিরদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাথে আছি। আমার জনগণের কাছে এটা বার্তা৷ আমি একজন অসুস্থ মানুষকে দেখতে (দিল্লিতে?) এসেছি। আমার বিজেপি-তে যোগদান ফেক নিউজ৷’’