গতবছরেই নেতাজির জন্মদিনে দিল্লির রেড রোডে নেতাজির সুবিশাল মূর্তি স্থাপন ও নেতাজী সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি। এ বছরেও, নেতাজীর আসন্ন জন্মদিন ২৩ শে জানুয়ারি, দেশজুড়ে বিশেষ সমারোহের সঙ্গে পালনের পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র ও সংঘ পরিবার। এই উপলক্ষ্যে কলকাতার শহিদ মিনারে 'নেতাজি লহ প্রণাম' শীর্ষক একটি প্রকাশ্য সভায় উপস্থিত থাকবেন সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত। এই আবহেই আগামী ৩০ জানুয়ারি গান্ধির প্রয়ান দিবসে দেশজুড়ে শহীদ স্মরণ করতে চায় কেন্দ্রের মোদ্ সরকার।
advertisement
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে রাজ্যগুলিকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি বেলা ১১ টায় ঠিক দু'মিনিটের জন্য নীরবতা পালন করতে হবে। নীরবতা পালন শুরু করতে হবে সাইরেন বাজিয়ে বা বন্দুক থেকে তোপধ্বনি করে। বা দুটিই করে। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্জি, বেলা ১১ টায় এই সাইরেনের শব্দ বা তোপধ্বনি শুনতে পেলেই, যে যেখানে আছে, সেই অবস্থায় তাঁরা যেন সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়েন এবং দু'মিনিট নীরবতা পালন শুরু করেন।
আরও পড়ুন, নজরে মেঘালয়, আজ থেকে ফের তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আরও পড়ুন, বঙ্গ বিজেপি'র কর্মীদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি!
ইতিহাস বলে, ১৯৪৮ সালের ৩০শে জানুয়ারি বিকেল ৫ টা ১৭ মিনিটে আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারান জাতির জনক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি। গান্ধি হত্যার সেই আততায়ী ছিলেন নাথুরাম বিনায়ক গডসে। যিনি হিন্দু মহাসভার সক্রিয় সদস্য ছিলেন। যে হিন্দু মহাসভাকে রাষ্ট্রিয় স্বয়ং সেবক সংঘ বা আরএসএস এর জনক বলে মনে করা হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এবার সেই গান্ধি হত্যার দিনটিকেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশের শহিদ স্মরন দিবস হিসাবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিল। ৩০ জানুয়ারি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বলিদান দেওয়া শহিদদের স্মরণের জন্য এই দিনটিকে এবার বেছে নেওয়ার পেছনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের রাজনীতি রয়েছে বলে মনে করছে শুধু বিরোধীরাই নয়, বিজেপির আদর্শগত গুরু আরএসএসও।
তাৎপর্যপূর্ন এটাই, গান্ধি হত্যার জন্যসংঘ কর্মী গডসের কৃতকর্মে আজও কোন অনুতাপ নেই সংঘের। সংঘের দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রপ্রচারক অজয় নন্দী বলেন, এটা কেন্দ্র সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে সংঘ কোনওভাবেই যুক্ত হতে চায় না। তবে, যেহেতু সংঘের স্বয়ংসেবকরাও দেশবাসী তাই, তারাও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত মেনেই চলবে। "
রাজনৈতিক মহলের মতে, ২৪ এর লোকসভা ভোটের আগে জনমানসে দল ও মোদির ভাবমূর্তি ফেরাতে গান্ধি, নেতাজিদের আঁকড়ে ধরতে চাইছে বিজেপি। কিন্ত, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের আদর্শগত অবস্থান থেকে সরে আসা আরএসএস-এর পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মহাত্মা গান্ধির মৃত্যুর দিনকে জাতীয় শহিদ দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্রের 'রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত' বলে মন্তব্য করে কৌশলে তা থেকে দূরে সরে থাকল সংঘ।