খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। বিকট আওয়াজে কার্যত হতবাক হয়ে যায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। বাইপাস লাগোয়া পাঁচতারা হোটেলের সামনে ছুটে আসেন কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ, দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যাক্তির দেহ পড়ে। জানা গিয়েছে ব্যক্তির নাম অশোক ঘোষ। তিনি চেতলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন : মা উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ ব্যক্তির! শহরের ব্যস্ততম ফ্লাইওভারের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে
advertisement
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে বাবা জানিয়েছিলেন, ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছেন। মেয়ের স্কুটারটি নিয়েই বেরিয়েছিলেন তিনি। ঘণ্টা দুয়েক পরে বাড়িতে আসে মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর। ঘটনার আকস্মিকতায় মেয়ে-সহ গোটা পরিবারই স্তম্ভিত। কেউ বুঝতেই পারছেন না কী কারণে এমন পথ বেছে নিলেন বাবা!
কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে, বছর ঊনসত্তরের অশোক ঘোষ চেতলার প্যারীমোহন রায় রোডের বাসিন্দা অশোকবাবু এ দিন রাত আটটা নাগাদ স্কুটারটি দাঁড় করিয়ে রেখে উড়ালপুলের উপর থেকে পরমা আইল্যান্ডের দিকে ঝাঁপ দেন। তাঁকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই অশোকবাবুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
বৃদ্ধের এমন পদক্ষেপে অবাক তাঁর পরিবার। তাঁরা জানান, আগামী বছর অশোকবাবুর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। দিনকয়েক আগেই পুরুলিয়ায় গিয়ে মেয়ের বিয়ে চূড়ান্ত করে আসেন তিনি। তাঁদের পরিবারেও একটি বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে। খবর পেয়ে হতবাক মেয়ে। রাতে হাসপাতালে ছুটে আসেন তিনি। কান্নায় ভেঙে পড়েন। সুকন্যা জানান, তাঁর বাবার বালিগঞ্জে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর মা পরিবারের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার মধ্যেই এমন আকস্মিক ঘটনার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরাও।
এদিকে, শহরের অন্যতম ব্যস্ত উড়ালপুলে একের পর এক মৃত্যু ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মাঝে মধ্যেই একইভাবে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া হচ্ছে এই মা উড়ালপুল দিয়েই। আত্মহত্যা রুখতে পুলিশ কি এবার অন্য উপায় বেছে নেবে? বাড়ানো হবে নিরাপত্তার কড়াকড়ি? যদিও মনোবিদদের মতে আত্মহত্যা কে কীভাবে করবে তা কোনওদিন বলা সম্ভব নয়। তবে তাদের এই প্রবণতা থেকে বের করে আনাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।