৩০ কেজি ওজনের মূর্তিটিতে পরানো আছে মুগার কাজ করা দামী অসম সিল্কের শাড়ি এবং সোনার গয়না। হাতে ধরে আছে প্রিয় ব্যাগ। বসার ঘরে স্ত্রীর সবথেকে প্রিয় জায়গায় মূর্তিটি রেখেছেন তাপস। শুধু বসার জায়গাই নয়। ওই শাড়ি-গয়নাও প্রিয় ছিল ইন্দ্রাণীর। ছেলের বউভাতে এই মুগা সিল্কই পরেছিলেন তিনি। ইসকন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ভক্তিবেদান্ত স্বামীর মূর্তি মায়াপুরে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন তাপস এবং ইন্দ্রাণী। ওই মূর্তির অনুসরণেই তাপসবাবুর জন্য তাঁর স্ত্রীর এই মূর্তি তৈরি করেছেন শিল্পী সুবিমল দাস। সময় লেগেছে ৬ মাসেরও বেশি।
advertisement
আরও পড়ুন : ৫০ বছর বয়সে ৬০ তম সন্তানের বাবা, আরও সন্তানের লক্ষ্যে চতুর্থ স্ত্রীর খোঁজ
এই মূর্তি স্থাপনের ইচ্ছে তাঁর একার নয়। জানিয়েছেন তাপস। প্রয়াত স্ত্রী ইন্দ্রাণীও চাইতেন যদি তিনি স্বামীর আগে চলে যান, তাহলে এরকমই মূর্তি যেন বসানো হয় বাড়িতে। এক দশক আগে মায়াপুর ঘোরার সময় স্বামীকে জানিয়েছিলেন মনের ইচ্ছে। সেটাই পূর্ণ করেছেন। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী-সহ সব আগ্রহীদের একথাই বলছেন তিনি। জানাচ্ছেন, স্ত্রীর ইচ্ছে পূর্ণ করেছেন। ২০২১ সালের ৪ মে প্রয়াত হন ইন্দ্রাণী। তার পর ইন্টারনেট থেকে শিল্পী সুবিমলের খোঁজ পান তাপস। নতুন বছরের শুরুতে তাঁর বাড়িতে ফিরে এসেছেন স্ত্রী, মূর্তিরূপে।
আরও পড়ুন : বাঙালির একান্ত নিজস্ব পদ চচ্চড়ি ও ছেঁচকি খেয়েছেন নিশ্চয়ই, জানেন কি এদের মধ্যে পার্থক্য কী কী
৩৯ বছরের দাম্পত্য কাটিয়ে চলে গিয়েছেন ইন্দ্রাণী। স্ত্রীর এই বিশেষ ইচ্ছে যাতে যথাযথভাবে পূর্ণ হয়, তার জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি তাপস। বারাসতের যে দর্জির কাছ থেকে ইন্দ্রাণী পোশাক বানাতেন, সেখান থেকেই এসেছে মূর্তির জন্য প্রয়োজনীয় পোশাকের অংশ। আত্মীয়স্বজনরা বহুবার নিষেধ করেছিলেন এরকম মূর্তি বসাতে। কিন্তু নিজের পরিকল্পনা থেকে একচুলও সরেননি তাপস। স্ত্রী যখন হাসপাতালে ছিলেন তাপসের দিন কাটত বাড়িতে আইসোলেশনে। সেই আক্ষেপ ভুলতে পারেন না প্রৌঢ়। স্ত্রীর সঙ্গেই আছেন তিনি, এই বিশ্বাসেই আগামী দিনগুলি কাটাতে চান বিপত্নীক তাপস।