এবারের পুরসভা নির্বাচনে কলকাতায় কার্যত সবুজ ঝড়। ১৩৪ ওয়ার্ডে জিতেছে রাজ্যের শাসক দল। আসন সংখ্যার নিরিখে বিজেপি অবশ্য দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে। তাঁদের দখলে ৩ আসন। নির্দল প্রার্থীরাও জয়ী হয়েছেন তিন ওয়ার্ডে। আর দুটি করে আসন পেয়েছে বাম ও কংগ্রেস। কিন্তু দেখা গিয়েছে, কলকাতার বহু ওয়ার্ডেই বামেরা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।
পরিসংখ্যান বলছে, কলকাতার ৬৫ আসনে বামেরা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৪৭ ওয়ার্ডে, কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে ১৬ আসনে আর নির্দল প্রার্থীরা দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন পাঁচটি ওয়ার্ডে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, বামেদের বাস্তবেই পুনরুত্থান ঘটছে। যার কিছুটা আন্দাজ মিলেছিল শেষ উপনির্বাচনগুলিতেও। বিজেপি অবশ্য এখনও সন্ত্রাসের অভিযোগই করে চলেছে। তবে, তাঁদের প্রাপ্তি বলতে ২২ নম্বর ওয়ার্ডে মীনাদেবী পুরোহিত ডবল হ্যাটট্রিক জয়, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজয় ওঝার জয় এবং ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে সজল ঘোষের জয়। এদিকে বামেদের হয়ে ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন নন্দিতা রায় আর ৯২ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিআই-এর হয়ে জিতেছেন মধুছন্দা দেব। কংগ্রেসের হয়ে ভরসা সেই ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের সন্তোষ পাঠক ও ১৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াসিম আনসারি।
advertisement
আরও পড়ুন: হুঁশিয়ারিতেও কাজ হয়নি, দলের সাংসদদের নিয়ে ফের 'ক্লাস' নরেন্দ্র মোদির
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে ১৪৪টি ওয়ার্ডে প্রার্থীও দিতে পারেনি বিজেপি। বাস্তব বুঝেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দলের প্রার্থীদের সামনে মাত্র ১০টি আসনে জেতার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দিয়েছিলেন। কোনও নির্বাচনের আবহে দলের কোনও নেতা এত কম সংখ্যক আসন জেতার জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করে দিতে পারেন, সেটাই আশ্চর্যের ঠেকেছিল রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের কাছে।ফলাফলেও কার্যত তারই ছায়া পড়ল। শহর কলকাতায় বাস্তবেই জমি হারালো বিজেপি। ২০১৫ সালে ৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল গেরুয়া শিবির। এবার তাঁরা কার্যত অর্ধেকে নেমে এসেছে। মাত্র ৩টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে তাঁরা।
আরও পড়ুন: সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের 'নামেও' নির্দল তনিমার হার, তৃণমূলের সুদর্শনার ফের বালিগঞ্জ-জয়
আর সেই সূত্রেই শহরের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে হয় বাম, নয় কংগ্রেস। বিজেপি সেখানে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। আর এই ছবিটাই বিজেপির জন্য দুশ্চিন্তার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ক্রমশ জমি হারাচ্ছে তাঁরা। আর করোনা-কালে রেড ভলেন্টিয়রদের লাগাতার মানুষের পাশে থাকা, কৃষক আন্দোলনের সময় ধারাবাহিক আন্দোলনের মতো বেশ কিছু কারণ বামেদের আবার ফিরিয়ে আনছে বিরোধী বৃত্তে।