লস্কর সদস্য শেখ আবদুস নঈমের গত দু’দিন ধরে ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। লস্কর-ই-তৈবার সক্রিয় সদস্য মৃত্যুদণ্ডে সাজা প্রাপ্ত আসামি এই নঈমকে তিহার জেল থেকে কলকাতা আনা হয়েছে মঙ্গলবার।
আরও পড়ুন- রাত আড়াইটে, পার্ক সার্কাসে মারাত্মক কাণ্ড! ডিসিপি অফিসের সামনেই দেহ! যা ঘটল...
বনগাঁ আদালতের দেওয়া ফাঁসির সাজার বিরুদ্ধে নিজেই সওয়াল করেছে কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের নির্দেশেই তার ঠিকানা এখন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। সেখানে বন্দিদশা কাটাচ্ছেন খাদিম কর্তা অপহরণ কাণ্ড, কলকাতা আমেরিকা সেন্টারে জঙ্গি হানার মূল কাণ্ডারী আফতাব আনসারির মতো হাইপ্রোফাইল বন্দি। আছেন বৌদ্ধ গয়া বিস্ফোরণের মতো ঘটনার অভিযুক্ত কওসর। রয়েছে জঙ্গি জামালউদ্দিনও।
advertisement
এবার এই সংশোধনাগারে কড়া নিরাপত্তায় ঠাঁই হল শেখ আবদুল নঈমের। হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবারই এই মোস্ট ওয়ান্টেড ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামির নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য পুলিসের ডিজি ও কারা দফতরের এডিজিকে নির্দেশ দিয়েছিল।সেই মোতাবেক মঙ্গলবারই হাইকোর্টে শুনানি পর্ব মেটার পর কড়া নিরাপত্তা বলয়ে নঈমকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।
রাজ্য কারা দফতর সূত্রে খবর, নঈম একা নয়। বর্তমানে এই সংশোধনাগারে নাশকতামূলক কাজকর্মে জড়িত পাঁচ আসামি বন্দিদশা কাটাচ্ছে এই সংশোধনাগারে। তাই নিরাপত্তার কোনও ফাঁক নেই। লস্কর সদস্য নঈমকে রাখা হয়েছে সেলে। সর্বক্ষণ কারারক্ষীদের মোতায়েন রাখা হয়েছে বলেই কারা দফতর সূত্রে খবর।
শুধু তাই নয়, যে সেলে আছে নঈম, সেখানে নজরদারির জন্য রয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও। তাতে সংশোধনাগারের অফিস থেকেই সর্বক্ষণ নজরে রাখা হচ্ছে নঈমকে । ২০১৪ সালে দমদম সংশোধনাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার রেকর্ডও আছে নঈমের। এই বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে মাথায় রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা দফতরের এক কর্তা।
আরও পড়ুন- কেন দীর্ঘ গরমের ছুটি দিয়েছে সরকার? বিস্ফোরক দাবি দিলীপ ঘোষের! কী বললেন?
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রে খবর, নর্মাল ডায়েটে রয়েছে নঈম। সংশোধনাগারে আনার পরই নিয়ম মেনে করা হয়েছে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও। সব মিলিয়ে আরও এক হাইপ্রোফাইল বন্দির নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত সংশোধনাগারের অন্দরমহল।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে শেখ আবদুল নইম ও তার সঙ্গীরা প্রবেশ করার চেষ্টা করছিল। বাকি তিনজনের মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মহম্মদ ইউনুস, আবদুল্লা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা মুজাফফর আহমেদ। তাদের কাছে থেকে ভুয়ো পরিচয়পত্র, লাইসেন্স পাওয়া যায়। সঠিক নথি দেখাতে পারেননি তারা। পরে নইমদের কাছ থেকে বিস্ফোরকও বাজেয়াপ্ত করা হয়।
সিআইডি এই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করেছিল। তাদের লস্কর যোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। নঈম একা নয়, ২০০৭ সালে তার সঙ্গে আরও চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নঈম ছাড়াও বাকিদের মধ্যে ছিল পাক নাগরিক মহম্মদ ইউনুস, আবদুল্লাহ ও জম্মু কাশ্মীরের বাসিন্দা মুজাফ্ফর আহমেদ। সবাইকেই ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছিল।