কেন ভাসল কলকাতা ?
কলকাতার আকার কিছুটা গামলার মতো। চারপাশ উঁচু। মাঝে নিচু। তাই, বৃষ্টি হলেই জল জমে। কিন্তু, মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে কলকাতাবাসী যে দৃশ্য দেখলেন, তা নজিরবিহীন। গলি থেকে রাজপথ। সর্বত্রই জল থইথই। কেন এই জল-বিপর্যয় ? কেন এই ভাবে ভাসল মহানগরী ? কেন জল নামতে সময় লেগে গেল ? কলকাতার জমা জল গঙ্গায় গিয়ে পড়ে ৷ গঙ্গায় রয়েছে লকগেট। এই লকগেট খোলা থাকলে জমা জল গিয়ে পড়ে গঙ্গায়। জোয়ারের সময় গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যায় বলে লকগেট বন্ধ রাখা হয়। যাতে জোয়ারের জল কলকাতাকে ভাসিয়ে না দেয়। সোমবার রাতে জোয়ারের সময় গঙ্গার জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে ১৮ ফুট বেশি ছিল। তাই সোমবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত বন্ধ ছিল লকগেট। এই সময়েই রেকর্ড বৃষ্টি হয় কলকাতায়।
advertisement
সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গড়িয়ায়। ৩৩২ মিলিমিটার। এক ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে তাকে ক্লাউড বার্স্ট বলা হয়। অর্থাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি। সোমবার রাত তিনটে থেকে ভোর চারটের মধ্যে প্রায় ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সাধারণত কলকাতা থেকে জল বের করা হয় একাধিক খাল দিয়ে। যেমন বাগজোলা, চড়িয়াল, চৌবাগা, তপসিয়া ইত্যাদি। এদিন সেটাও সম্ভব হয়নি। কারণ সবক’টি খালই জলে টুইটুম্বুর। জল বেরোবে কোথা দিয়ে! ফলে যা হওয়ার তাই-ই হয়েছে। মঙ্গলবার ভেসেছে কলকাতা।
ধীরে ধীরে জল নামছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। তার মধ্যেই নতুন দুঃসংবাদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুর্যোগঘটিত কারণে মৃত্যু হয়েছে আরও এক জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু কলকাতায় মৃত্যু হল নয় জনের। লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনা ধরলে দুর্যোগে প্রাণ হারালেন ১০ জন। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, দ্বিতীয়ায় ‘রেকর্ড’ করে ফেলেছে কলকাতার বৃষ্টি। ৩৯ বছর পর এক দিনে এতটা বৃষ্টি ঝরল কলকাতায়।