সোমবার থেকে টানা বিদ্যুৎহীন এলাকা। বাড়িতে খাবার জল নেই
গতকাল থেকে নেই বিদ্যুৎ। হয়রানির শিকার কর্নফিল্ড রোডের বাসিন্দারা। বিদ্যুৎ না থাকায় চলছে না পাম্প, নেই জল। CESC-র কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের। ৩৬ ঘণ্টার উপর নেই বিদ্যুৎ! বিদ্যুৎ-জল না থাকায় বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে!
advertisement
দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জেও এখনও রাস্তায় জল। স্টেশন থেকে গড়িয়াহাট যাওয়ার পথে জমে জল। স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জল সরানোর চেষ্টায় পুরসভা। একাধিক বেসরকারি স্কুলে আজ পরীক্ষা। জল পেরিয়েই বেসরকারি স্কুলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা। রাসবিহারী অ্য়াভিনিউয়ে এখনও জল জমে রয়েছে তবে গতকালের তুলনায় কম। পাম অ্য়াভিনিউতে জল সরাতে তৎপর পুরসভা।
সোমবার পাটুলিতেও জল জমে রয়েছে। কোমর সমান জল। রাস্তায় জলে ডুবে গাড়ি। ফ্ল্যাটের ভিতর ঢুকে গিয়েছে জল। একাধিক জায়গায় কারেন্ট নেই। জমা জল পেরিয়েই যাতায়াত সাধারণ মানুষের।
রাজা রামমোহন রায় সরণিতেও জল। ২৪ ঘণ্টা পরও কেশব সেন স্ট্রিট ক্রসিংয়ে জল জমে রয়েছে।
জল সরানোর চেষ্টায় পুর কর্মীরা। তবে, গতকালের তুলনায় আজ জল অনেকটা কমেছে। মঙ্গলবার সকালেও ঠনঠনিয়ায় জমে জল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পাম্প চালিয়ে জল সরানোর চেষ্টায় পুরসভা।
গতকালের তুলনায় আজ জল অনেকটা কমেছে।
সোমবার রাতভর বৃষ্টিতে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে যায়। বিভিন্ন গলিপথ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্তও সেই জল নামেনি। পুজোর সময়ে শহরকে জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুর প্রশাসন। প্রবল দুর্যোগ। রাতভর অতিভারী বৃষ্টি। বন্ধ গঙ্গার লকগেট। এই তিনের জেরেই ভাসল কলকাতা। কিন্তু কলকাতাবাসীর দুর্ভোগ পুরোপুরি কাটেনি।
সেন্ট্রাল এভিনিউ, এমজি রোড ক্রসিং, মেডিকেল কলেজের ৫ নম্বর গেটের উল্টো দিক, বর্ণপরিচয় মার্কেটের সামনে কিছু জায়গায় বিদ্যুতের তার পড়ে রয়েছে রাস্তায়। এক জায়গায় ছোট ইলেকট্রিক বক্স খোলা রয়েছে।
কলকাতার আকার কিছুটা গামলার মতো। চারপাশ উঁচু। মাঝে নিচু। তাই, বৃষ্টি হলেই জল জমে। কিন্তু, মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে কলকাতাবাসী যে দৃশ্য দেখলেন, তা নজিরবিহীন। গলি থেকে রাজপথ। সর্বত্রই জল থইথই। কেন এই জল-বিপর্যয় ? কেন এই ভাবে ভাসল মহানগরী ? কেন জল নামতে সময় লেগে গেল ? কলকাতার জমা জল গঙ্গায় গিয়ে পড়ে ৷ গঙ্গায় রয়েছে লকগেট। এই লকগেট খোলা থাকলে জমা জল গিয়ে পড়ে গঙ্গায়। জোয়ারের সময় গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যায় বলে লকগেট বন্ধ রাখা হয়। যাতে জোয়ারের জল কলকাতাকে ভাসিয়ে না দেয়। সোমবার রাতে জোয়ারের সময় গঙ্গার জলস্তর স্বাভাবিকের থেকে ১৮ ফুট বেশি ছিল। তাই সোমবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত বন্ধ ছিল লকগেট। এই সময়েই রেকর্ড বৃষ্টি হয় কলকাতায়।
কেমন ছিল ১৯৭৮ সালের বন্যার ছবি?
সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গড়িয়ায়। ৩৩২ মিলিমিটার। এক ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে তাকে ক্লাউড বার্স্ট বলা হয়। অর্থাৎ মেঘভাঙা বৃষ্টি। সোমবার রাত তিনটে থেকে ভোর চারটের মধ্যে প্রায় ৯৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সাধারণত কলকাতা থেকে জল বের করা হয় একাধিক খাল দিয়ে। যেমন বাগজোলা, চড়িয়াল, চৌবাগা, তপসিয়া ইত্যাদি। এদিন সেটাও সম্ভব হয়নি। কারণ সবক’টি খালই জলে টুইটুম্বুর। জল বেরোবে কোথা দিয়ে! ফলে যা হওয়ার তাই-ই হয়েছে। মঙ্গলবার ভেসেছে কলকাতা।