মনোরঞ্জন ব্যাপারী জানিয়েছেন, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশ নিবাসী আইপিএস অফিসার সতীশবাবু আমার সঙ্গে দেখা করবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন বিধান সভার লবিতে। ওনাকে এখানে টেনে এনেছে আমার একখানা বই ‘বাতাসে বারুদের গন্ধ’’! যার ইংরেজি অনুবাদ ‘‘ Gun powder in the air'' । লেখক হিসাবে এটাও আমার কাছে কম বড় প্রাপ্তি নয়।’’
আরও পড়ুন- গতি মাত্র ৫ কিমি, বেহালায় দৌড়ল মেট্রো
advertisement
স্কুলের চৌকাঠ পেরনোর সুযোগ মেলেনি কোনও দিন। কিন্তু দেশের হেন কোনও নামী বিশ্ববিদ্যালয় নেই, যেখানে তিনি বক্তব্য রাখেননি বা তাঁর জীবন আর সাহিত্য নিয়ে আলোচনা হয়নি। বাংলা সাহিত্যের পাঠকদের কাছে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর লেখা একেবারেই অনন্য এক অভিজ্ঞতা। তার প্রধান কারণ, বাংলা সাহিত্যসমাজের যে চেনা বৃত্ত, মনোরঞ্জন তার একেবারে বাইরের লোক। তিনি মুটে-মজুরি করেছেন, ছাগল চড়িয়েছেন, দীর্ঘ সময় যাদবপুর অঞ্চলে রিক্সা চালিয়েছেন, চায়ের দোকানে টেবিল বয়ের কাজ করেছেন, মেথরের কাজ করেছেন, ছত্তিসগঢ়ের জঙ্গলে দিনের পর দিন কাঠ কেটে সাইকেলে চাপিয়ে গ্রামে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেছেন, চাকরি করেছেন নাইট গার্ডের।
বিশ্বখ্যাত আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবে অংশ নিয়েছেন শঙ্খ ঘোষ, মহাশ্বেতা দেবী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন, তসলিমা নাসরিনের মতো বাঙালি সাহিত্যিকদের সঙ্গে। আটের দশকের গোড়ায় রিক্সাচালক মনোরঞ্জনের পরিচয় হয়ে যায় সওয়ারি মহাশ্বেতা দেবীর। তাঁর উৎসাহেই লেখা শুরু। নিজের জীবনের এক একটা অংশই তো তাঁর এক একটা গল্প হয়ে উঠেছে। উঠে এসেছে উপন্যাসের একের পর এক চরিত্র। কিন্তু পাঠক সমাদরে এই সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল তাঁর আত্মজীবনী ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’ প্রকাশের পর।