২০১৮ সালের মে মাসের মাঝামাঝি ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। রাত ১১টার কিছু পরে, লালবাজারের ১০০ নম্বরে ফোন যায়। শ্যামনগর থেকে বৃদ্ধা বলাকা চক্রবর্তী, ফোন করে বলেন- তার মেয়েকে, জামাই ও তার পরিবারের লোকেরা খুব মারধোর করছে। মেয়েকে বাঁচান'।ফোন পাওয়া মাত্র লালবাজারের পুলিশ, নেতাজি নগর থানার পুলিশ বাঁশদ্রোণীর গীরিধারি অ্যাপার্টমেন্টের ওই বাড়িতে যায়। কিন্তু বলাকা দেবীর মেয়ে পায়েল চক্রবর্তী পুলিশকে তৎক্ষণাৎ ফিরিয়ে দেয়।
advertisement
কোনও অভিযোগ না পেয়ে পুলিশ ফিরে গেলেও,৩১শে মে' পায়েলের গলায় ফাঁস নিয়ে মৃত্যুর খবর যায় বলাকা দেবীর কাছে। মেয়ের এই পরিণতির কথা আগে থেকে অনুমান করতে পেরেছিলেন বলাকা। সাবধান করেছিলেন মেয়েকে। তাঁর অভিযোগ, "মেয়ে পায়েল ওরফে ডল শুধু চেয়েছিল স্বামী মৃগাঙ্ক রায়ের সঙ্গে, শাশুড়ি, ভাসুর মৃদুলকে নিয়ে সংসার করতে। তাই মায়ের বারণের বিরুদ্ধে গিয়েও লড়েছিলেন।"
২০১৭র জানুয়ারি মাসে পায়েলের বিয়ে হয়েছিল মৃগাঙ্ক রায়ের সঙ্গে। ২০১৮ সালে ৩১ মে শ্বশুর বাড়ির অত্যাচারে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকে স্কুল শিক্ষক জামাই মৃগাঙ্ক, দাদা মৃদুল ও শাশুড়ি রীনা রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, তারা গ্রেফতার হয়। কিন্তু প্রমানের অভাবে পরে তারা জামিন পেয়ে যায়। পুলিশ তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিলেও এখনও বিচার হয়নি।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে আজ রাজ্য বিজেপি! বিকেলে রাজভবনে সি ভি আনন্দ-সুকান্ত সাক্ষাৎ
পায়েলের মা বলাকা দেবী একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করলেও কোনও ফল হয়নি। বরং এমনও আইনজীবী আছেন, যিনি মামলা লড়ার জন্য ভুল বুঝিয়ে টাকা নিয়ে গিয়েছেন বৃদ্ধার কাছ থেকে। তবুও এখনও অপরাধীদের বিচার হল না,বলে অভিযোগ বলাকা দেবীর। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন,'মেয়ের চিতার সামনে শপথ করেছিলাম, বলেছিলাম,ডল তোর খুনের অপরাধীদের আমি শাস্তি দেওয়াব। আমার বয়স হচ্ছে। পারলাম না কিছু করতে। ওরা এখনও দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার মেয়েকে খুব কষ্ট দিয়ে মেরেছে ওরা।ও সংসার করতে চেয়েছিল। তাই আমার কথা শোনেনি।"