কলকাতা পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার রুপেশ কুমার জানিয়েছে, দেহের মাথাটা ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। মধ্যমগ্রামে ভাড়া থাকতেন নিহত মহিলা সুমিতা ঘোষ। তবে দেহ টুকরো করা ছিল না। নিহত সুমিতা ঘোষের দেহ পেঁচিয়ে সেট করে রাখা ছিল ট্রলির মধ্যে। মাথাটা ট্রলির মধ্যেই ছিল। পেট থেকে একটু ওপরে ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় দেহ ছিল৷ দেহ ও মাথায় আঘাত রয়েছে। মূলত মাথায় আঘাত করা হয়েছিল বলে স্বীকার করেছে ধৃতরা।
advertisement
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ১১ তারিখ ফাল্গুনিদের মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লির বাড়িতে আসেন সুমিতা। স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল ফাল্গুনির, তাই মায়ের সঙ্গেই থাকছিল সে। জিজ্ঞাসাবাদে মুখে অভিযুক্তরা জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৪’টে নাগাদ পিসিশাশুড়ির সঙ্গে অশান্তি শুরু হয়। সেই সময়ই ফাল্গুনি তাঁকে ধাক্কা মারে, তাতেই দেওয়ালে ধাক্কা লেগে আঘাত পান এবং অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর আবার জ্ঞান ফিরে এলে ফাল্গুনি ফের তাঁকে ইট দিয়ে ঘাড়ে-মাথায় আঘাত করে, তাতেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপরই তাঁকে নীল ট্রলিতে ভরে ফেলেন মা-মেয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য। যদিও জিজ্ঞাসাবাদের মুখে আরতি এবং ফাল্গুনি পরবর্তীতে জানান, গোটা ঘটনা ঘটেছে রবিবার, সোমবার নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিন সকালে ওই দুই মহিলা কুমোরটুলি ঘাটের কাছে একটি ট্রলি ব্যাগ গঙ্গায় ফেলার তোড়জোড়় করছিলেন। তাদের আচরণ বেশ অস্বাভাবিক মনে হয় এলাকায় উপস্থিত অনেকের। এরপর বেশ কয়েকজন মিলে এগিয়ে যান মহিলাদের কাছে। ট্রলি ব্যাগ খুলতেই মহিলার দেহ দেখতে পান তাঁরা। এরপর স্থানীয়রাই খবর দেয় পুলিশকে। নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ সন্দেহভাজন দুই মহিলাকে আটক করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় ট্রলি ব্যাগটি। স্থানীয়দের দাবি, ওই দুই মহিলা খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহ গঙ্গায় ফেলে দিতে এসেছিল। পুলিশ গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ৫ টাকারও কম খরচ! অফিস যাওয়ার আগে ২ মিনিটে ঝাঁ চকচকে হবে রান্নাঘর…! মহিলাদের জন্য ‘সুপারহিট’ টোটকা
আটক দুই মহিলা স্থানীয় বাসিন্দাদের জানান, তারা সম্পর্কে মা ও মেয়ে, বারাসাত সংলগ্ন কাজীপাড়ার বাসিন্দা। ভোরবেলা থেকে বাগবাজার, আহিরিটোলা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ট্রলি নিয়ে ঘোরাফেরা করেছেন। শেষে কুমোরটুলি এলাকায় এসে ফাঁকা পেয়ে পাঁচিল টপকে ট্রলিটি ফেলার চেষ্টা করেন। তখন কিছু স্থানীয় লোক বিষয়টি দেখে ফেলায় তৎক্ষণাৎ পাকড়াও করে তাদের। ট্রলি খুলতেই ভেতরে এক মহিলার টুকরো টুকরো দেহাংশ দেখতে পায় তারা। তৎক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে আটক করে অভিযুক্তদের।
তথ্যঃ সাহ্নিক ঘোষ ও সুদীপ্ত সেন