সমাজ মাধ্যমে সেই ঘটনার কথা তুলে ধরে ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। তবে আগামী ৭ দিনের মধ্যেই বকেয়া দুই মাসের মজুরি একলপ্তে কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কলকাতা কর্পোরেশনের ১০০ দিনের প্রকল্প বা শহুরে রোজগার যোজনার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ সদস্য অসীম বসু। আলো ঝলমলে শহর ভাসে উৎসবে। উৎসবের এই শহরকে সুন্দর করে রাখেন ১০০ দিনের প্রকল্পের কর্মীরা। জঞ্জাল সাফাই থেকে নিকাশি বা উদ্যান পরিচর্যা থেকে স্বাস্থ্য সচেতনতা প্রচার যারা করে থাকে। বর্তমানে সেই কলকাতা পুরসভার পরিষেবার মেরুদণ্ড শহুরে রোজগার যোজনা বা ১০০ দিনের কর্মীরা গত দু’মাস পরিবার নিয়ে অন্ধকারে। দিন আনি দিন খাই পরিবারে নামমাত্র মজুরির বিনিময় যে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেন তাঁরা মজুরি পাননি দু-একদিন নয় দু’মাস অতিক্রান্ত। কলকাতা পুরসভা দীর্ঘদিন স্থায়ী পদে লোক নিয়োগ করেনি। জঞ্জাল সাফাই বিভাগ থেকে শুরু করে নিকাশি, উদ্যান, রাস্তা, ইঞ্জিনিয়ারিং সব বিভাগে প্রচুর শূন্যপদ। সেই স্থায়ী কর্মীদের কাজ নামমাত্র দিনমজুরির বিনিময় করেন এই প্রকল্পের কর্মীরা। এই মুহূর্তে এই প্রকল্পের কর্মীদের সংখ্যা ১৪ হাজারের ও বেশি।
advertisement
কাজ করেও বেতন পাচ্ছেন না কর্মীরা। কলকাতা পুরসভার এই ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী কাউন্সিলররা। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ facebook পোস্ট করে মেয়রের কাছে জবাব চেয়েছেন। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ১০০ দিনের কর্মীরা তৃণমূল কর্মী। তবে খারাপ লাগে আমার ওয়ার্ডে শুধু পাচ্ছেন না টাকা এমন নয় গোটা কলকাতায় পাচ্ছেন না। যে ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর সেখানেও পাচ্ছেন না। নামমাত্র মজুরির বিনিময়ে পেটের তাগিদে খাটে। কিন্তু কাজ করে সময় মতো মজুরি পান না। সত্যি নিন্দা জানানোর ভাষা নেই।
সিপিআই কাউন্সিলর কলকাতা পুরসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারপারসন মধুছন্দা দেব সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মাঝে মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে। যারা এই প্রকল্পের কর্মী তারা একদম প্রান্তিক পরিবারের। স্থায়ী কর্মীর কাজ করেন নামমাত্র টাকায়। কাজ করার পর দু-একদিন নয় টানা দু’মাস টাকা পাচ্ছেন না। অবিলম্বে এই টাকা তাদের মিটিয়ে দেওয়া হোক। আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলেই আশ্বাস দিয়েছেন।
১০০ দিনের প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ সদস্য অসীম বসু জানিয়েছেন, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। সাত দিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হোলির আগেই দুই মাসের বকেয়া টাকাও কর্মীরা অ্যাকাউন্টে পেয়ে যাবেন। এরপর অর্থাৎ মার্চ মাসে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তারা মজুরির টাকা পাবেন।কলকাতা পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী ১০০ দিনের প্রকল্পের একজন দক্ষ কর্মীর একদিনের মজুরি ৪০৪ টাকা। অদক্ষ কর্মীর একদিনের মজুরি ২০২ টাকা। সুপারভাইজারের একদিনের মজুরি ৩০৩ টাকা। কলকাতা পুরসভায় বর্তমানে প্রায় ১৪৬০০ কর্মী ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করেন। সব থেকে বেশি জঞ্জাল সাফাই বিভাগে কর্মরত।