কলকাতা পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পার্থ চোঙদারকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা৷ ২০২৩ সালে পুরসভার এই আধিকারিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিলেন দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা৷ সেই তল্লাশিতেই ২০১৭ থেকে ২০২১-এর মধ্যে ওই ইঞ্জিনিয়ারের নামে বেনামে প্রায় ৫ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার সম্পত্তির সন্ধান মেলে৷
প্রায় দু বছর ধরে তদন্ত চলার পর অভিযোগের প্রমাণ মেলায় গতকাল ওই ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকরা৷ এ দিন অভিযুক্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে আদালতে পেশ করে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন সরকারি আইনজীবী৷ তিনি অভিযোগ করেন, ওই আধিকারিকের নামে যে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে, তা হিমশৈলের চূড়া মাত্র৷ সরকারি আইনজীবীর কথায়, র্নীতি দমনের অনেক মামলা করেছি এই মামলা অনেক বড়, যেন হিমালয়!
advertisement
আদালতে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ফিক্সড ডিপোজিট থেকে শুরু করে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, গোল্ড বন্ড, জীবন বিমা- বিভিন্ন উপায়ে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে রেখেছেন পার্থ চোঙদার৷ নিউ টাউনের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে ২৮ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে তাঁর৷ একাধিক বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে কোথাও ১০ লক্ষ আবার কোথাও ২০ থেকে ২৫ লক্ষ করে টাকা বিনিয়োগ করেছেন পার্থ৷য
এমন কি, মালদহের বাসিন্দা নিজের শ্বশুর শাশুড়ির ঠিকানা এবং নথি ব্যবহার করেও কলকাতার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে পাঁচ থেকে ছটি অ্যাকাউন্ট খুলে এক কোটি টাকা জমা করেছেন তিনি৷ কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় ছটি ফ্ল্যাট কিনেছেন তিনি৷ বোলপুরে একটি ৩৬ লক্ষ টাকা মূল্যের বাংলোর মালিকও এই পার্থ চোঙদার৷
দুর্নীতি দমন শাখার অভিযোগ, নিজের স্ত্রীর নামে রিয়েল এস্টেট সংস্থা খুলে তাতেও বিনিয়োগ করেছেন পার্থ৷ সরকারি কর্মী হয়েও সেই সংস্থার অংশীদার ছিলেন পার্থ চোঙদার। বিনিয়োগ করেছেন সোনাতেও। ব্যাঙ্কের লকারে ৭৩৪.৮৫ গ্রাম সোনার হদিশ পায় দুর্নীতি দমন শাখা৷ ফ্রিজ করা হয়েছে সেই অ্যাকাউন্ট৷ এর পাশাপাশি ২০১৭ থেকে ২০২১-এর মধ্যে একাধিকবার তাঁর বিদেশযাত্রার প্রমাণও মিলেছে৷
আদালতে দুর্নীতি দমন শাখা হিসেব দিয়ে দাবি করে, বছরে ১৪ লক্ষ টাকা বেতন পেতেন ওই আধিকারিক৷ কিন্তু ব্যাঙ্কে প্রায় ৯০-৯৫ লক্ষ টাকা জমাতেন ওই ইঞ্জিনিয়ার৷ এই টাকার উৎস কী, তার সঠিক ব্যাখ্যাও পার্থ চোঙদার দিতে পারেননি বলে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে৷ এই বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস জানতেই ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন বলে আদালতে আর্জি জানিয়েছে দুর্নীতি দমন শাখা৷
