কলকাতা বিমানবন্দরে গড়ে উঠছে দেশের বৃহত্তম এই মেট্রো স্টেশন। মাটির নীচে সবচেয়ে বড় মেট্রো স্টেশন! কলকাতা বিমানবন্দরে গড়ে উঠছে দেশের বৃহত্তম এই মেট্রো স্টেশন। এটি তৈরির পাশাপাশি ইয়ার্ডও তৈরি করা হচ্ছে। কলকাতার মধ্যে থাকা চক্র রেলকে যুক্ত করা হয় বিমানবন্দরের সঙ্গে।
২০০৬ সালে ২৯ জুলাই, বিমানবন্দর পর্যন্ত চক্ররেল পরিষেবা চালু হয়। তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। রাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে সেই কাজ সম্পন্ন হয়। দমদম ক্যান্টনমেন্ট থেকে ওভারহেড লাইন বানানো হয়। সারাদিনে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করত এই পথে।
advertisement
আরও পড়ুন- ৬ দিনের ব্রিটেন সফর শেষ, আজ সন্ধ্যায় কলকাতায় ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী
যদিও যাত্রী না হওয়ায় শিয়ালদহ থেকে দমদম বিমানবন্দর বা মাঝেরহাট থেকে দমদম বিমানবন্দর পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই লাইনকে মেট্রো রেলের লাইন হিসেবে বদলে ফেলা হবে। তাতে অবশ্য বাধা দেয় এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া।
তাদের তরফ থেকে জানানো হয়, মাটির ওপর দিয়ে লাইন গেলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই জানানো হয় , মাটির নীচে স্টেশন করতে হবে। নকশা-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে জটিলতা চলতে থাকে। অবশেষে , ২০১৬ সালে কলকাতা বিমানবন্দর মেট্রো স্টেশনে কাজের সূচনা করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জংশন স্টেশন হবে এটি।
নোয়াপাড়া থেকে বারাসাত অবধি মেট্রো রুটের অন্যতম স্টেশন হবে এটি। অপরদিকে, গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রো রেলের প্রান্তিক স্টেশন হবে এটি৷ যেহেতু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মেট্রো স্টেশন, তাই প্রচুর যাত্রী হবে এটা ধরে নেওয়াই হচ্ছে। অন্যদিকে , দ্রুত এই প্রকল্পের কাজ করার জন্য রেল মন্ত্রক কাজ চালিয়ে যেতে বলেছে।
আরও পড়ুন- রাজ্যের নয়া মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ কুমার আগরওয়াল
যদিও এই মেট্রো প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের শেষে। ২০২০ সালে তিন মাস কাজ বন্ধ হয়ে যায় লকডাউনের জন্য। অবশেষে সেই কাজের একটা গোটা অংশ শেষ হয়ে গেছে। নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর অবধি এই মেট্রো প্রকল্পের কাজ শেষ। শীঘ্রই এই প্রকল্প যাত্রী পরিষেবা চালু হতে পারে।
কেমন দেখতে হচ্ছে বিমানবন্দর স্টেশন! মাটির ১৪ মিটার নীচে হচ্ছে স্টেশন। থাকছে ৫টি প্ল্যাটফর্ম। বিমানবন্দর মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলি ১৮০ মিটার করে লম্বা হবে। তবে সম্পূর্ণ স্টেশন এলাকা হচ্ছে ৩২০ মিটার। ৬৩৩ মিটার এলাকা জুড়ে স্টেশন বিল্ডিং বানানোর কাজ চলছে।
অন্যদিকে, দ্রুত চলছে বিমানবন্দরের স্টেশনের ইয়ার্ড বানানোর কাজ। এখানে থাকছে ৫টি লাইন। ইয়ার্ড চওড়া হবে ৪৮ মিটার। স্টেশনের মধ্যে থাকছে একটা ক্রস প্যাসেজ। স্টেশনের একদিকে যশোর রোড , অন্যদিকে কলকাতা বিমানবন্দর। বিমানবন্দর মেট্রো স্টেশনে ছ’টা সিঁড়ি, ছ’টা লিফট ও ১২’টা এসক্যালেটর থাকবে। যে সাবওয়ে তৈরি হচ্ছে যা যশোর রোড ও বিমানবন্দর মেট্রো স্টেশনে সংযুক্ত হবে তাতে ৩৩০ মিটার লম্বা ও ১১ মিটার চওড়া হচ্ছে।
সাবওয়েতে ওঠানামা করার জন্য ৩টি এসক্যালেটর, ২ লিফট ও ২ সিঁড়ি থাকবে। বিমানবন্দরের সঙ্গে মেট্রো স্টেশনকে সংযুক্ত করবে যে সাবওয়ে তা ২৭০ মিটার লম্বা ও ১৩ মিটার চওড়া হবে। এই সাবওয়েতে ৪ লিফট, ৬টা এসক্যালেটর ও ৩টে সিঁড়ি থাকবে।*