সম্প্রতি মা উড়ালপুলে চিনা মাঞ্জা সুতো গলায় আটকে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর বিশেষ দল গঠন করে লালবাজার। যে দলটি মূলত মা উড়ালপুলের ওপর টহল দেয়। নজরদারি চালায় সংলগ্ন এলাকায় ওড়া ঘুড়ির উপর। ঘুড়ি কেটে সুতো-সহ মা উড়ালপুলে যাতে না পড়ে এবং তা থেকে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্যই ওই দলটি তৈরি করা হয়।
advertisement
প্রত্যেকদিন বিকেল তিনটে থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মা উড়ালপুলের উপর নজরদারি চালায় ওই দলটি। রবিবার বিকেলে রোহিত যখন তার বন্ধুর সঙ্গে মোটরবাইকে যাচ্ছিল তখনও নজরদারি চালাচ্ছিল ওই দলটি। তা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা ঘটে। শুধু দুর্ঘটনা ঘটাই নয়, রক্তাক্ত অবস্থায় রোহিতকে বেশ কিছুটা বাইক চালিয়ে যেতে হয়। বাইপাসে নামার পরে পুলিশের সাহায্য পায় ওই যুবক। যদিও পুলিশের ওই দলটির কাজ শুধু ঘুড়ির উপর নজরদারি রাখাই নয়। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেই দ্রুত উদ্ধার করাও দলটির অন্যতম কাজ। যদিও রোহিতের অভিযোগ, রবিবার তাকে জখম অবস্থাতেও সাহায্যে আসেনি পুলিশ। তিনিই বাইক চালিয়ে পুলিশের কাছে যান সাহায্যের জন্য।
রোহিত বলেন, "বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎই থুতনিতে আটকে যায় মাঞ্জা সুতো। সঙ্গে সঙ্গে বাইকের গতি কমিয়ে সুতোটা নিজে হাতে ধরে ফেলি। তা সত্ত্বেও থুতনি ও গলায় বেশ খানিকটা কেটে গিয়েছে। প্রচুর রক্ত বেরোচ্ছিল। পুলিশ থাকা সত্বেও কিভাবে এই ঘটনা ঘটলো আমার জানা নেই। রক্তমাখা অবস্থাতেই বাইক চালিয়ে বাইপাস পর্যন্ত গিয়ে তবে পুলিশের দেখা পাই। তারপর পুলিশ আমার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।"
পুলিশের একটি অংশের মতে, গোটা মা উড়ালপুলের দুদিকে নজরদারির জন্য যে পাঁচ জন পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো না হলে সঠিকভাবে নজরদারি চালানো মুশকিল।
মুখে সেলাই না পড়লেও সোমবার কথা বলতে ও খাওয়া-দাওয়া করতে যথেষ্টই কষ্ট হচ্ছে রোহিতের। তবে রবিবারের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তিনি। রোহিতের কথায়, "আর কখনও কোনও উড়ালপুল দিয়ে বাইক নিয়ে যাব না। অন্য বাইক আরোহীদেরও অনুরোধ করব তারা যেন নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উড়ালপুল দিয়ে যাতায়াত না করে। কারণ প্রশাসন ঘুড়ি ওড়ানো তো বন্ধ করতে পারবে না, মানুষকেই নিজেদের সুরক্ষার দিকটা দেখতে হবে।"
SUJOY PAL