এই মাসেই শুরু হচ্ছে হকারদের সরকারি খাতায় নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া। ২০১৫ সালে হকার সমীক্ষায় যাঁরা নাম লিখিয়েছিলেন এমন হকারই নথিভূক্ত হতে পারবেন। শর্ত তাঁদের মধ্যে বর্তমানে দোকানদারি করা হকারদের প্রাথমিকভাবে নথিভুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন : চিনা মাঞ্জার মরণফাঁদ! স্ত্রী পুত্রকে নিয়ে মৃ্ত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন মোটর সাইকেল চালক
advertisement
এর জন্য প্রত্যেক হকারকে ব্যক্তিগতভাবে স্ট্যাম্প পেপারে সই করে তা জমা করতে হবে। তার ভিত্তিতে দেওয়া হবে একটি পরিচয়পত্র। আইডি কার্ড দেওয়া হবে কিছু শর্তসাপেক্ষে। কলকাতা পুরসভায় টাউন ভেন্ডিং কমিটির (টিভিসি) বৈঠকের পর জানিয়েছেন হকার পুনর্বাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা নথিভূক্তকরণের বা রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু করে দিতে চাইছি। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৫ সালে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা মেনেই কলকাতা শহরের হকারদের আইডেন্টিটি কার্ড দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন : আরজিকর হাসপাতাল থেকে রোগীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার! মানসিক অবসাদ থেকেই কি ‘আত্মহত্যা’?
কলকাতা শহরের তিনটি থানা এলাকায় ৭ থেকে ২১ নভেম্বর হকারদের নিয়ে পাইলট সার্ভে করা হয়। হাতিবাগান, নিউমার্কেট এবং গড়িয়াহাট বাজার এলাকায় এই সমীক্ষা চলে। সমীক্ষা কলকাতা পুরসভার তত্ত্বাবধানে টাউন ভেন্ডিং কমিটির উপস্থিতিতে আয়োজন করে কলকাতার তিন থানা। গড়িয়াহাট বাজারের জন্য গড়িয়াহাট থানা নিউমার্কেট বা ধর্মতলা এলাকার জন্য নিউমার্কেট থানা এবং হাতিবাগান মার্কেটের জন্য শ্যামপুকুর থানা। টাউন ভেন্ডিং কমিটি বা টিভিসির তরফে হকারি করতে কলকাতা পুরসভার যা নিয়মাবলী সেই যাবতীয় নির্দেশ প্রচার করা হয়। দু’সপ্তাহের সমীক্ষার পর পুরভবনে বসে পর্যালোচনা বৈঠক।
কলকাতা শহর জুড়ে হকার সমস্যা যে কত গভীর তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। উঠে আসে নানা তথ্য নতুন করে হকার বসানোর অভিযোগ থেকে টাকা নিয়ে হকার বসানো, এমনকি ফুটপাত ও ক্যারেজ হয়ে দখল করে হকার বসানোর অভিযোগও ওঠে।
হকার সমস্যার গভীরতা অনেকটাই, মানছেন পুরসভার আধিকারিক থেকে ডাউন ব্যান্ডিং কমিটি এবং কলকাতা পুলিশের সকলেই। হকারদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে শহরে স্থানাভাবও পুর কর্তৃপক্ষের চিন্তার এক বড় কারণ। তবুও, এসব বিষয় এড়িয়ে আপাতত হকারদের লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পরিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, "২০১৫ সালে যাঁরা নথিভুক্ত হয়েছেন, সেই ৫৯ হাজারের তালিকা ধরেই সমীক্ষার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে যাঁরা এখনও দোকানদারি করছেন, তাঁদের নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কোর্টপেপারে সই করিয়ে ব্যবসায়ীদের থেকে একটি কাগজ নেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে প্রত্যেকেই পাবেন আই কার্ড।"
কলকাতা পুরসভার আধিকারিক সূত্রে খবর, "আই কার্ডে হকারের নাম, স্টল নম্বর, দোকানের বিবরণ প্রভৃতি থাকবে। সেটি হাতে পেলে সরকারি খাতায় নথিভুক্ত হবেন তাঁরা। দেশের হকার আইন অনুসারে, ব্যাঙ্কঋণসহ অনেক সুবিধাই তাঁরা ভোগ করবেন। তবে, আপাতত নতুন কোনও আবেদনপত্র নেওয়া হবে না। পুরনোদের কার্ড বিলি সম্পূর্ণ হলে নতুনদের কথা ভাবা হবে। সেক্ষত্রেও কারা থাকবেন, কোথায় বসবেন, সবটাই চূড়ান্ত করবে টিভিসি।"