বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পরপর তিনটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শহরে। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন কলকাতা পুরসভার প্রশাসন। প্রতিটি ঘটনার পরেই হয়েছে নতুন করে তদন্ত। পুরসভার নিজস্ব বিভাগীয় তদন্ত ছাড়াও করা হয়েছে বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ দিয়ে বিশেষ তদন্ত কমিটির পর্যালোচনা।
advertisement
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাগুলির তদন্তে দেখা গিয়েছে, কোথাও ফিডার বক্সের ঢাকনা খোলা ছিল। কোথাও আবার হুকিংয়ের কারণে বিপত্তি ঘটেছে। কোথাও বাতি স্তম্ভটাই বিদ্যুৎ সংযোগ হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে দোসর হয়েছে বৃষ্টি ও জল জমা। এই ধরনের দুর্ঘটনা রুখতে এবার নয়া পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভার আলোক বিভাগ।
আরও পড়ুন - Astro Tips: কালো তিলেই গ্রহরাজ শনিদেব তুষ্ট, আরও ‘এই’ দেবতাদের চরণেও অর্পণ করুন চমকাবে ভাগ্য
কলকাতা শহরের বাতিস্তম্ভগুলির গায়ে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ অপরিবাহী ম্যাট। নীল রঙের এই বিশেষ ম্যাথ বাতিস্তম্ভের যে জায়গায় হাত দেওয়ার প্রবণতা থাকে সেই এলাকাটা মুড়ে দেওয়া হচ্ছে। ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে ১০ নম্বর বরোর দু’টি ওয়ার্ডে এই কাজ শুরু হয়েছে। এই পরিকল্পনা সফল হলে আগামীদিনে সারা শহরেই এই কাজ করা হবে।
আরও পড়ুন - Wimbledon 2022: কোন দেশের মেয়ে এলেনা, কোর্টে আগুন লাগানো পারফরমার, রূপের আগুনও জবরদস্ত
এর ফলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ হবে, তেমনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও কমে যাবে বলে আশাবাদী পুর-প্রশাসন। কলকাতা পুরসভার দশ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন জুঁই বিশ্বাস বলেন, আপাতত ৮১ ও ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই বিশেষ ম্যাট জড়ানো হচ্ছে। বাকি ওয়ার্ড গুলোতেও একইভাবে বাতিস্তম্ভে জড়ানো হবে এই বিশেষ ম্যাট। শুধু ত্রিফলা নয় সব ধরনের বাতিস্তম্ভেই পুরসভার পক্ষ থেকে এই ম্যাট জড়ানো হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে মূলত কলোনি বা ঘিঞ্জি জনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে এই কাজ করা হচ্ছে। কারণ, ঘিঞ্জি এলাকাতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে বাতিস্তম্ভ বা ফিডার বক্সের ঢাকনা চুরি থেকে শুরু করে হুকিংয়ের অভিযোগ বিস্তর। বাতিস্তম্ভগুলির নীচ থেকে উপর পর্যন্ত বিদ্যুতের অপরিবাহী এই বিশেষ ম্যাট জড়িয়ে দেওয়া হলে দু’টি সমস্যারই দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যে শতাধিক বাতিস্তম্ভে এই বিশেষ ম্যাট জড়ানোর কাজ হয়েছে। আলোক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুত পরিবহণ করার ক্ষমতা এই ম্যাটের নেই। ফলে কেউ তা স্পর্শ করলেও বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে পড়ার কোনও ভয় নেই। প্রাথমিকভাবে ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের ঝালদার মাঠ বস্তি এবং ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের নারকেলবাগান মোড়ের বাতিস্তম্ভে বিশেষ ম্যাট লাগানো হয়েছে।
১০ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন জুঁই বিশ্বাস আরো বলেন, এই অঞ্চলগুলি ঘনবসতিপূর্ণ এবং গলি বেশ সঙ্কীর্ণ। ফলে রাস্তায় বেরোলে কোথাও না কোথাও পোস্টে ছোঁয়া লেগে যেতে পারে। বিশেষ করে বয়স্ক লোকেরা ও বাচ্চারা বাতিস্তম্ভ ধরে হাঁটাচলাও করেন। নিয়মিত বাতিস্তম্ভ পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টির পর কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তার গ্যারান্টি কে দেবে! তাছাড়া, পথে-ঘাটে ভবঘুরেরা বিভিন্ন সময় বাতির ঢাকনা চুরি করে নিয়ে পালাচ্ছে। সেখানে অজান্তেই মৃত্যুফাঁদ তৈরি হচ্ছে। তাই এই বিশেষ ম্যাট লাগানো হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই বিপদ থেকে রক্ষা পেতে।
কলকাতা পুরসভার আলো বিভাগের মেয়র পারিষদ সন্দীপরঞ্জন বক্সি বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু আটকাতে আমরা বদ্ধপরিকর। এই পরিকল্পনা সফল হলে সর্বত্রই তা করা হবে।
BISWAJIT SAHA