জিজ্ঞাসাবাদের পর পুরো দেশ জুড়ে চলে ধরপাকড়৷ এনআইএ এই অভিযান চালানোর পরে কার্যত জেএমবি জঙ্গি গোষ্ঠীর শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছিল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই জঙ্গি গোষ্ঠী এই মুহূর্তে ভেঙে ১৪ টুকরো হয়ে গেছে। ওয়ান্টেড জঙ্গি সালাউদ্দিন সালেহা এই জঙ্গি সংগঠন কেরল এবং পশ্চিমবঙ্গে কোনও রকম টিকিয়ে রেখেছে বলেই গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে এসেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: বীভৎস অবস্থা উত্তরবঙ্গের! রাজ্যের একাধিক জেলায় জারি রেড অ্যালার্ট, কবে থামবে দুর্যোগ!
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, জেএমবি-র ১৪ টি গোষ্ঠী এখন বাংলাদেশে বিপুল ভাবে সক্রিয়৷ তবে, গোয়েন্দা সূত্রে খবর তারা এদেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্লিপার সেল তৈরি করার কাজ করছে। ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দার শারক্কিয়া’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠনে জেএমবির একাধিক জঙ্গি সদস্যেরা যোগ দিয়েছে বলে গোয়েন্দারা প্রমাণ পেয়েছেন। এমনকি, জেএমবির পুরনো সদস্যেরা কার্যত এই জঙ্গি সংগঠনে আসা নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে এই সংগঠনটি নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। জিএমবি-র আরও বেশ কয়েকজন জঙ্গি তথা স্লিপার সেল তারা ‘আনসার আল ইসলাম’ নামে আরও একটি সংগঠনের ছত্রছায়ায় রয়েছে। এছাড়াও, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কেএনএফ সংগঠনের সঙ্গেও একাধিক জঙ্গি তথা স্লিপার সেল যুক্ত হয়েছে৷ তার-ও প্রমাণ পেয়েছেন এদেশের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: ফের জল বাড়তে পারে তিস্তায়! কালিম্পং-জলপাইগুড়িকে সতর্ক করল নবান্ন, সিকিমে মৃত ১১
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ , ‘হিজবুত তাহারির’ , ‘আল্লাহর দল’ মতো ১৪টি নতুন জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে মূল জেএমবির জঙ্গিরা তথা গা ঢাকা দিয়েও রয়েছে এই মুহূর্তে তারা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এক আধিকারী জানান, খাগড়াগড় কাণ্ডের অভিযুক্ত কাওসারকে গ্রেফতার করার পরে আর যত জেএমবি সংগঠনের শিরদাঁড়া ভেঙে পড়েছিল। সালাউদ্দিন সালেহা পলাতক থাকলেও তার ঘনিষ্ঠ একাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে যে কারণে জেএমবি গোষ্ঠী সংগঠনের ক্ষেত্রে একটি বড় ধাক্কা, তার অনুভব করেছে।
যদিও সালাউদ্দিন সালেহার খোঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালানো হচ্ছে পাশাপাশি ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিদেশেও তার সন্ধান চালানো হচ্ছে গোয়েন্দাদের তরফ থেকে। গোয়েন্দাদের দাবি, সে পলাতক থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে কার্যত নব্য জেএমবি সংগঠনকে টিকিয়ে রাখতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে কিন্তু গোয়েন্দাদের তরফ থেকে তল্লাশি এবং অভিযান করার ফলে তার এই চেষ্টা বারবার বিফল হয়ে যাচ্ছে।
পাশাপাশি, বাংলাদেশেও একাধিক জেলায় তাদের বেস ক্যাম্প ছিল, সেখানেও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন অর্থাৎ র্যাবের তল্লাশির জেরে সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে বলেই সূত্রের খবর। পাশাপাশি একাধিক জঙ্গিকেও গ্রেফতার করেছে র্যাব।
দুই দেশের গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে এই সংগঠনগুলি কার্যত আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। সংগঠনকে টিকিয়ে রাখবে কার্যত চুরি ডাকাতির মতো কাজ করছে বলেই খবর। পাশাপাশি, বিভিন্ন অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য মিলছে না। এখন সেই সমস্ত সংগঠন আল-কায়দা তথা আইএস জঙ্গিদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছে বলেই দুই দেশের গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে এসেছে।
এদেশের গোয়েন্দা সূত্র খবর, জেএমবি সংগঠন ভেঙে পড়লেও তাদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ আল কায়দা জঙ্গিদের খুঁজে বের করা। ইতিমধ্যে একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত জঙ্গিদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং গোয়েন্দারা। প্রায় দেড় বছর আগে মুর্শিদাবাদের ডোমকল থেকে কার্যত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ।
রোহিঙ্গা সূত্র খবর, আরও একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। মূলত, এই মুহূর্তে জঙ্গি সংগঠনদের নতুন টার্গেট কার্যত পরিচয় শ্রমিকদের মগজ ধোলাই করে তাদের সংগঠনে নাম লেখানো। এমনটাই গোয়েন্দা সূত্রে খবর। যদিও এই কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অর্থাৎ এনআইএ।