দলের এই বিবৃতির বিরুদ্ধে কার্যত নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই এক্স হ্যান্ডেলে পাল্টা পোস্ট করেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দলের মতের সঙ্গে তিনি সহমত নন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনেন তৃণমূলের অন্যতম সিনিয়র এই সাংসদ৷ কল্যাণ অভিযোগ করেন, এই বিবৃতি দিয়ে আসলে দল প্রকৃত অপরাধীদের যাঁরা আড়াল করছেন, সেই সমস্ত নেতাদেরই সমর্থন করছে দল৷ ২০১১ সালের পর যাঁরা দলে এসেছেন, সেই নেতাদের একাংশকেওসরাসরি এই ধরনের ঘটনার জন্য দায়ী করে তৃণমূলের অন্দরেই শোরগোল ফেলে দিয়েছেন কল্যাণ৷
advertisement
এক্স হ্যান্ডেলে দলকে ট্যাগ করে তৃণমূল সাংসদ লেখেন, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে পোস্ট করা হয়েছে, ‘আমি তার সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছি৷ যে নেতারা আসল অপরাধীদের আড়াল করছে তাঁদেরকেই কি তারা (তৃণমূল কংগ্রেস) সমর্থন করছে? এই ধরনের ঘটনার জন্য যে নেতারা দায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু খাতায় কলমে বিবৃতি দিলে কোনও পরিবর্তন আসবে না৷ আরও দুর্ভাগ্যজনক হল ২০১১ সালের পর দলে আসা কিছু নেতাই এই ধরনের ঘটনার পর প্রশ্নের মুখে৷ এই ধরনের অপরাধীদের যাঁরা আড়াল করছেন আমি তাঁদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছি৷ আমি যে কথাগুলি বলেছি, তার প্রকৃত উদ্দেশ্য কী তা বোঝার জন্য ন্যূনতম মেধা এবং নৈতিকতা প্রয়োজন৷ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে যা দেখা যাচ্ছে না৷’
প্রসঙ্গত, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেছিলেন, ‘বন্ধু যদি বান্ধবীকে ধর্ষণ করে তাহলে পুলিশ কীভাবে নিরাপত্তা দেবে? কলেজের ভিতরেও কি পুলিশ রেখে দেওয়া সম্ভব?’
শ্রীরামপুরের সাংসদের এই মন্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই এ দিন আবার বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, ‘ওই ছাত্রী যদি ওখানে না যেতেন তাহলেই আর কিছু ঘটত না৷’
কল্যাণ এবং মদনের মন্তব্যকে অস্ত্র করে নতুন করে শাসক দলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানায় বিরোধীরা৷ এ দিন সন্ধ্যায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানানো হয়, ‘দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজে যে ঘৃন্য ঘটনা ঘটেছে, সেই প্রসঙ্গে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিধায়ক মদন মিত্রের মন্তব্য সম্পূর্ণ তাঁদের ব্যক্তিগত মত৷ এই ধরনের মন্তব্য থেকে দল সম্পূর্ণ ভাবে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করছে এবং তার নিন্দা করছে৷ এই ধরনের মন্তব্য কোনওভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না৷ আমাদের দৃঢ় অবস্থানই বজায় থাকছে৷ মহিলাদের উপরে অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি এবং এই ঘৃন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের কঠোর শাস্তি দাবি জানায় দল৷’
কল্যাণ দলের এই বিবৃতির বিরোধিতা প্রকাশ্যেই করে যেভাবে এই পরিস্থিতির মধ্যেও তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন, তাতে শ্রীরামপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও পদক্ষেপ করে কি না, সেটাই এখন দেখার৷