যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, হস্টেলে জুনিয়র ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রদের উপরে র্যাগিং চালিয়েছিল সিনিয়রদের একাংশ। যার থেকে ‘বাঁচতেই’ ওই ছাত্র হস্টেলের তিনতলা থেকে ঝাঁপ দেয়। এমনটা ধরেই পুলিশের তরফে শুরু হয় তদন্ত। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করো হয়েছে৷ বহু ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। যাদবপুরের ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও।
advertisement
আরও পড়ুন: ’পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ নিয়ে নবান্নে সর্বদলীয় বৈঠক‘! অনুপস্থিত থাকতে পারে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এবং হস্টেলে নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন অনেকেই। এরেপরেই নিরাপত্তার জন্য বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারমধ্যে অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট অথবা গেটে সিসিটিভি লাগানো। বেশ কয়েকটি গেটে প্রহরী বাড়ানো। রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার জন্য পরিচয় পত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ, মাদক সেবনের ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত। হস্টেলে রেজিস্টারে নাম নথিভুক্ত করানোর মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।
এদিকে এই পুরো ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তেজনাও বেড়েছে সমান তালে। ঘটনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি জোরাল হয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন কর্মসূচিও পালন করেছে। এসএফআই আগেও কর্মসূচি করলেও এদিন ফের ছাত্রমৃত্যুর প্রতিবাদে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফে।
সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, “২৯ অগাস্ট চোরেদের নয় ছাত্রদের সমাবেশ হবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে স্বপ্নের হত্যা হয়েছিল বহিরাগত সিনিয়রদের দাপাদাপি এবং র্যাগিংয়ে হাতে, সেই ঘটনার সুবিচার চেয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে র্যাগিং সম্বন্ধে জনসচেতনতা করতে চেয়ে এবং পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত কলেজ ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় বহিরাগত সমাজ বিরোধীদের হাত থেকে মুক্ত করে ছাত্রদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে ২৯ অগাস্ট বেলা ১টায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এইটবি বাসস্ট্যান্ডে এক বিশাল ছাত্রসমাবেশের আহ্বান জানিয়েছে এসএফআই। নাম দেওয়া হয়েছে স্বপ্নের সমাবেশ।’’
জানা গিয়েছে, এই সমাবেশে অভিভাবকরা থাকবেন। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা থাকবেন। বক্তা হিসেবে থাকবেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, নীলোৎপল বসুরা। এই বিষয়টাকে সামনে রেখে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে চাইছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি এই বৃত্ত আরও বড় করে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়াই লক্ষ্য সংগঠনের। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ৷