সমাবর্তনের আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ফের জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এদিন যাদবপুরের অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে বহিষ্কার করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনের নির্দেশ উপেক্ষা করে সমাবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন উপাচার্য। সেই কারণেই বহিষ্কার বলে দাবি করা হয় রাজভবনের তরফে।
আরও পড়ুন: বড়দিনে কী খেল দেখাবে ঘূর্ণাবর্ত? রবিবার সকালেই জমাট কুয়াশা, মেঘলা আকাশ! বৃষ্টি হবে?
advertisement
তবে, একদিকে রাজ্যপাল যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, সেই নির্দেশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য আবারও নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, উপাচার্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন বুদ্ধদেব সাউ। যা নিয়ে চরম পর্যায়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত।
রাজ্যের তরফে শনিবার মধ্যরাতে নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হয়েছে, ২৪ ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন প্রত্যেক বছর অনুষ্ঠিত হয়। এই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্ট্যাটুটে উল্লিখিত রয়েছে। এর সঙ্গে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জড়িয়ে রয়েছে। তাই সেই কথা মাথায় রেখেই উপাচার্যের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশিকা দিচ্ছে রাজ্য। রাজ্যের তরফে চিঠি দিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে লেখা হয়েছে যে, রাজ্যপাল যে পদ্ধতিতে উপাচার্যকে অপসারণ করেছেন, তা বেআইনি।
একতরফা ভাবে রাজ্যপাল উপাচার্যকে অপসারণ করতে পারেন না বলেও সেই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক সময়ে রায়গুলির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পাঠানো চিঠিতে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের মেয়াদ বাড়ানোর চিঠি দেওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে সকালের বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়। তেমনটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে৷
বুদ্ধদেব সাউ একটি বিবৃতি জারি করে বলেছিলেন, “রাজ্যপালের বহিষ্কারের চিঠি আমার কাছে এসেছে। রাজ্যের তরফে মেয়াদ বাড়ানো চিঠিও আমার কাছে এসেছে। দুটো চিঠি আমি কোর্টের সদস্যদের সামনে রাখব। কোর্ট এর সদস্যেরা পরবর্তী ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য হিসেবে বুদ্ধদেব সাউ-কে নিয়োগ করেছিলেন খোদে রাজ্যপাল। গত কয়েকদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে যাদবপুর – রাজভবন টানাপোড়ন চলছিল। কোর্ট বৈঠকের সম্মতি চাইলেও রাজভবনের তরফে তা খারিজ করে দেওয়া হয়।
যদিও রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। রাজভবনের আপত্তি সত্ত্বেও শনিবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আমন্ত্রণ পত্র বিলি করা হয়। আমন্ত্রণ পত্র বিলি করে সকাল ১০ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু করার কথা জানানো হয়। সেই মোতাবেক আমন্ত্রণ পত্র বিলি করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে যায়। তারপরেই গতকাল সন্ধেবেলা নতুন করে তৈরি হয় জটিলতা৷