কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন নিহত ছাত্রীর বাবা৷ লিখিত অভিযোগে তিনি জানালেন, দুর্ঘটনা নয়, কেউ বা কারা তাঁর মেয়ে জলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে খুন করেছে৷ প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝিলপাড়ে জল থেকে উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রীকে৷ তাঁর বন্ধুরাই তাঁকে সেই সময় উদ্ধার করেছিল বলে জানা গিয়েছে৷ এরপরে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থাতেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু, ততক্ষণে সব শেষ৷ ঘটনায় একদিকে যেমন উঠে এসেছে দুর্ঘটনার তত্ত্ব, অন্যদিকে সন্দেহ দানা বেঁধেছে নানা ঘটনা নিয়ে৷ এবার সরাসরিই মেয়ের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ আনলেন তাঁর বাবা৷
advertisement
সোমবার সকালে প্রথমে লালবাজার যান মৃত ছাত্রীর বাবা-মা৷ সেখানে তদন্তকারী ও হোমিসাইড বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরই তাঁরা যাদবপুর থানায় যান।
আরও পড়ুন: বঙ্গের দুর্গাপুজোয় আমন্ত্রণ! অমিত শাহের সঙ্গে ৪৫ মিনিট…দিল্লিতে বৈঠক সারলেন শুভেন্দু
এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে মৃত ছাত্রীর বাবা দাবি করেন, ওত অন্ধকারে তাঁর মেয়ে কখনওই একা শৌচালয়ে যেতে পারে না৷ এই বিষয়টিই তাঁর বিশ্বাস হচ্ছে না৷ তাঁর দাবি, নিশ্চই তাঁর মেয়ের সঙ্গে কেউ ছিল৷
লিখিত অভিযোগে মৃত ছাত্রীর বাবা জানিয়েছেন যে, অনামিকা মণ্ডল-কে কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করে ১১ তারিখ রাত ৯:৩০ থেকে ১০:২৬ এই সময়ের মধ্যে পুকুরে ঠেলে ফেলে দেন৷ যার ফলে মৃত্যু হয় তাঁর মেয়ের। এই সময়ের cctv ফুটেজেও পড়ুয়াকে দেখা যায়৷ সেই সময় তাঁর সঙ্গে কারা ছিল, ইতিমধ্যেই পুলিশ তাঁদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে৷
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে চার-চারটে গোটা দিন৷ শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিলেন, ঘটনাস্থলের কোনও ভিডিও ফুটেজ নেই৷ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠানের বিধি তৈরি করতে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ কমিটি। ওই কমিটি ঠিক করবে কী নিয়মে অনুষ্ঠান হবে? নিয়ম ভাঙা হচ্ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি।
আরও পড়ুন: ‘কান খুলে শুনে নিন…,’ বিহার থেকে বাংলার নাম তালিকায় রেখেই, মোদি যা বললেন…স্পষ্ট বার্তা
পুলিশি তদন্তে আস্থার কথাও জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ তাই নতুন করে আর তদন্ত করবেন না তাঁরা। সব ফুটেজ ও তথ্য পুলিশকে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। সন্ধ্যার পরে নিরাপত্তা ক্যাম্পাসে কী রয়েছে, মাদক সেবন হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছে বিশেষ টিম৷ সিসিটিভি ও নিরাপত্তা রক্ষী বাড়াতে সরকারকে ফের চিঠি দিল যাদবপুর। ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় এবার জলাশয়ে বসবে ফেন্সিং। পড়ুয়াদের জন্য থাকবে মেন্টর। প্রতি ২৫ জন পড়ুয়া পিছু থাকবে ১ জন মেন্টর। গাড়ি ও বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে।