চিঠির শুরুতেই রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে এই ঘটনাকে পৈশাচিক বলে উল্লেখ করেছেন বিশিষ্টজনেরা৷ ঘটনার পর রাজ্য সরকারের তৎপরতাকে স্বাগত জানিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে েলখা হয়েছে, 'সম্প্রতি মার্চ মাসে বীরভূমের রামপুরহাটে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডটিকে যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পৈশাচিক আখ্যা দেবেন৷ আমরাও তার ব্যতিক্রম নই৷ ঘটনা পরবর্তীতে আপনার তত্ত্বাবধানে প্রশাসন, অনুসন্ধান এবং ক্ষতিপূরণ দানে তৎপর হয়েছে এবং এই পদক্ষেপকে নিঃসন্দেহে স্বাগত৷ কিন্তু তাও প্রশ্ন থেকে যায়, এরকম একটি ঘটনার আগে পুলিশ প্রশাসন তৎপর হল না কেন?'
advertisement
আরও পড়ুন: ১০ পরিবারকে চাকরি, রামপুরহাট কাণ্ডে মৃতদের পরিবারপিছু চাকরির প্রস্তাব এল নবান্নে
রামপুরহাটের ঘটনা ছাড়াও আনিস খান, তুহিনা খাতুন, ঝালদা এবং পানিহাটির দুই কাউন্সিলর খুনের ঘটনারও প্রতিবাদ করা হয়েছে চিঠিতে৷ পাশাপাশি রাজ্যের পুরনির্বাচনে যে হিংসা ও অশান্তির ছবি সামনে এসেছে, তারও সমালোচনা করেছেন চিঠির প্রেরকরা৷
একই সঙ্গে, পুরভোটে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট হওয়াকে উদ্বেগজনক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা৷ এই ঘটনাগুলির তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও সাধারণ মানুষের মধ্যে স্পষ্ট ধারনা নেই বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে৷
আরও পড়ুন: DVC-র জলাধার সংস্কার প্রসঙ্গে কেন্দ্রের 'জবাবি চিঠি'! মিলে গেল মমতার অভিযোগ
যাঁরা চিঠিতে সাক্ষর করেছেন, তাঁরা অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও রাজনৈতিক স্বার্থে এই চিঠি তাঁরা লিখছেন না৷ বরং দেশের মধ্যে প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে ওঠার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে৷ বিজেপি-র নাম না করেও ২০২১-এর নির্বাচনে রাজ্যে 'বিভাজন সৃষ্টিকারী' শক্তিকে রুখে দেওয়ার কৃতিত্বও মু্খ্যমন্ত্রীকেই দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা৷ একই সঙ্গে রাজ্যের ভুল ত্রুটি অবিলম্বে শোধরানোপ্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেছেন তাঁরা৷ একই ভাবে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে হিংসার অভিযোগ উঠেছিল, ২০২৩ সালের নির্বাচনে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, মুখ্যমন্ত্রীকে সেই অনুরোধও করেছেন বিশিষ্টজনরা৷
চিঠির শেষ পর্যায়ে লেখা হয়েছে, 'গণতন্ত্র ও সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশপ্রেমী নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের আশা কিংবা আপনার কাছে দািব বলেত পারেন, বাংলার রাজনীতির এই দীর্ঘ ও কদর্য ঐতিহ্য বন্ধ হোক, আপনি আপনার প্রশাসনের মধ্যে দিয়ে তা সুনিশ্চিত করুন৷ রাজ্যের ও রাজ্যের মানুষের শুভার্থে এই চিঠিটি, আশা করি সেই মর্মে গৃহীত হবে৷'
প্রসঙ্গত আনিস খানের হত্যাকাণ্ড বা রামপুরহাটের মতো ঘটনার পর বিদ্বজনদের একটা বড় অংশ কেন চুপ, তা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছিল৷ সেই বিতর্কের মধ্যেই বিশিষ্টজনেদের একাংশের এই চিঠিকে মুখ্যমন্ত্রী এবং শাসক দল কীভাবে গ্রহণ করেন, সেটাও দেখার৷