সেই অনুসারে শুক্রবার সন্ধ্যায় আরজিকর হাসপাতালে পৌছায় মৃতের দাদা ও চিৎপুর থানার আধিকারিকরা। হাইকোর্টের নির্দেশে শনিবার কম্যান্ড হাসপাতালে ময়নাতদন্ত জন্য নিয়ে যাওয়া হবে আরজিকর হাসপাতাল থেকে।চিৎপুরের বিজেপি নেতা রহস্যমৃত্যুতে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়।কানাইয়া সোনকার যিনি প্রথম দেখেন অর্জুন চৌরাশিয়ার দেহ তিনি জানান, " পরশু এক মহিলা মারা যান ট্রেনদুর্ঘটনায়। বৃহস্পতিবার তাই পাড়ার লোকেরা গিয়েছিলো ভূতনাথ শ্মশান ঘাটে গিয়েছিলো সন্ধ্যা ৬.৩০ নাগাদ গোটা এলাকার লোকেরা। রাতে ১২ টায় ফেরে সবাই। সেই ফাঁকা সময়ে সুযোগে কিছু ঘটে থাকতে পারে।শুক্রবার সকালে গরু বিচালি নামাতে এসে দেখি একজন নিস্তব্ধ অবস্থায় রয়েছে। চৌকির উপর উঠে দেখি ঝুলন্ত দেহ। এরপর rpf কে খবর দেয়।
advertisement
এরপর বাড়ি আশেপাশে সবাই জানতে পারে আসে। খবর দেওয়া হয় পরিবারের সদ্যস্যদেরও। পায়ের নিচে কোনো টুল ছিল না। গামছা দিয়ে গলায় ঝুলন্ত দেহ দেখি। তবে গামছা ছিঁড়ে গিয়েছে, ওই ছেঁড়া গামছায় আবারো নট করে ঝুলন্ত দেহ। "তবে এই রহস্যমৃত্যু ঘিরে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা। মৃতের পিসতুতো দাদা বিনোদ বারুইয়ের প্রশ্ন, অর্জুন এর পা মেঝেতে ছিল। ঝুলন্ত দেহ হলেও কোনও রক্ত বেরোয়নি চোখ নাক মুখ থেকে, বা অন্য কিছুও আপাত দৃষ্টিতে মেলেনি। পরিত্যক্ত রেলের আবাসন থেকে যে কমলা গামছা ঝুলছিলো দেহ সেটা ছেঁড়া। আবার ওটা থেকে নট বাঁধা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাড়ে এগারো হাজার টাকা বেতন পান শাড়ি তৈরি কারখানা থেকে।
আরও পড়ুন - Berhampore Murder Update: সুতপার বান্ধবীই দিত নানা খবর, চা খেয়ে সুতপার উপর নজরদারি চালাত সুশান্ত
কিন্তু মৃত্যুর পর পকেটে ৫০০ টাকা ছাড়া আর টাকা পায়নি। কোথায় গেল টাকা? মোবাইল ফোন পাওয়া গিয়েছে। খুন বলে অনুমান দাবি মৃতের পরিবারের।অর্জুনরা তিন ভাই ও মা থাকেন। অর্জুন ছোট ভাই। মেজো ভাই অমিত ও বড় ভাই আনন্দ চৌরাশিয়া। অর্জুন সোদপুরে একটি শাড়ি কারখানায় কাজ করতেন। মৃতের পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আসে বাড়িতে। এসে লাঞ্চ বক্স রেখে বেরিয়ে যান অর্জুন। মৃতের আত্মীয় বিনোদ বারুই জানান, রাতে না ফেরায় পরিবারের সদ্যসরা থানায় খোঁজ নেন কারণ প্রিভিন্টিভ কোনও গ্রেফতার হয়েছে কিনা। কারণ শুক্রবার অমিত শাহ আসবেন। বাইক র্যালি ও স্বাগতম করার দায়িত্ব ছিল অর্জুনের উপর। তাই পরিবারের সদ্যসরা খোঁজ নেওয়ার পর থানা থেকে জানতে পারেন কোনো গ্রেফতার কেউ হয়নি।
এরপর তাঁরা নিখোঁজ ডায়েরি কথা বলেন। মোবাইল নম্বর দিয়ে ট্রাক করার জন্য পুলিশ চায়। কিন্তু রাত ভর দেহ মেলেনি। শুক্রবার সকালে স্থানীয় কানহাইয়া সোনকার দেখেন প্রথম। তারপরই শুরু হয় এলাকায় উত্তেজনা। একবার দেহ বের করলেও স্থানীয়দের বিক্ষোভার মুখে পড়ে দেহ ভিতরে ফের রেখে দেয় পুলিশ। এরপর দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, কল্যান চৌবে একে একে সব বিজেপি নেতারা আসেন। কিছুক্ষন পর পুলিশ দেহ বের করে নিয়ে যান আরজিকর হাসপাতালে। পুলিশ স্থানীয়দের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে। লাঠিচার্জ করা হয় বলে অভিযোগ।
আসেন তৃণমূল নেতা অতীন ঘোষ। বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। দুপুরে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থলে। সিবিআইয়ের তদন্ত দাবি করেছেন। পরিবারের আইনজীবি প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল জানান, "পুলিশের উপর আস্থা নেই। হাইকোর্ট নির্দেশ অনুসারে কমান্ডো হাসপাতালে দেহ ময়না তদন্ত করা হবে। " এখন ময়নাতদন্ত দিকে সকলে তাকিয়ে। খুন নাকি আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনো কারনে মৃত্যু? ময়নাতদন্ত পর গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হবে । তারপরই ঠিক হবে এই ঘটনার তদন্ত কারা করবেন পুলিশ না সিবিআই নাকি অন্য কোনো এজেন্সই। সেদিকেই সবাই তাকিয়ে।
ARPITA HAZRA