জানা গিয়েছে, যে দিন এই আন্দোলন শুরু হয়, সে দিনই ঢাকা যাওয়ার পরে আটকে গিয়েছিল মৈত্রী এক্সপ্রেস।দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য, বাংলাদেশে অশান্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে প্রথমে ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধের পক্ষপাতী ছিল ভারতই। যদিও পরবর্তী সময়ে ভারত এই রেল চলাচল শুরুর বিষয়ে উদ্যোগী হলেও এখন বাংলাদেশ সরকার কিছুটা ‘বেঁকে’ বসেছে। বাংলাদেশের রেল কর্তারা মনে করছেন, ভারতের ভিসা ইস্যু স্বাভাবিক না হলে ট্রেনে যাত্রী পাওয়া যাবে না। যাত্রীর অভাবে ইতিমধ্যে দু’দেশের সরকারি-বেসরকারি উড়ান চলাচলের সংখ্যাও কমিয়ে আনা হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: শরীরে একাধিক আঘাত, কলকাতা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টরের ভয়ঙ্কর মৃত্যু! কী করেছেন ‘বাড়ির লোক’?
এই প্রেক্ষাপটে দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল আবার কবে শুরু হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানান, বাংলাদেশের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া গেলেই দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল আবার শুরু হবে। গত জুলাই মাস থেকেই ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশে অশান্ত অবস্থার প্রেক্ষিতে বন্ধ ভারত এবং পড়শি এই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল। তখনই অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় খুলনা এবং কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস এবং নিউ জলপাইগুড়ি ও ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী মিতালি এক্সপ্রেসও।
কবে থেকে এই ট্রেনগুলি আবার চালু হবে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের তরফে কিছু জানানো হয়নি। পূর্ব রেল নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, রেক পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় পরবর্তী কোনও নোটিস না আসা পর্যন্ত সাময়িক বাতিল থাকবে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস, কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস, কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস এবং খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস। কিন্তু ১৩৪ দিন ধরে বেনজির ভাবে ভারত-বাংলাদেশ ট্রেন চলাচল বন্ধ। ১৯ জুলাই থেকে ২৯ নভেম্বর!
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাস পরিষেবা কিছুদিন বন্ধ থাকার পর তা-ও সচল হয়েছে। কলকাতা বা দিল্লির সঙ্গে আকাশপথে পুনর্বহাল গিয়েছে ঢাকা বিমানবন্দরের যোগযোগ। এমনকি মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার পুজোর আগে ইলিশও পাঠিয়েছে ভারতে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে দু’দেশের রেল যোগাযোগ পরিষেবা এখনও স্তব্ধ! ১৯ জুলাই থেকে বন্ধ কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস। ২০ জুলাই থেকে বন্ধ কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস। বাংলাদেশ রেলওয়েজের অনুরোধে জুলাই মাসে এই দুটি রুটে ট্রেন বন্ধ হয়েছিল। অসুবিধায় পড়েছেন দুই দেশের সাধারণ নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত মানুষ, যাঁদের চাইলেই বিমানে সফর করার সঙ্গতি নেই। এদিকে বাসযাত্রাও রোগীদের ক্ষেত্রে কষ্টকর।