ঔপনিবেশিকতা থেকে আজকের আধুনিক ডিজিটাল যুগ। সবই তো দেখেছে এই বৃদ্ধ। শহরের গতিময়তাকে দু’টি কাঁটায় ধরে রেখেছে কেবল। দু’দিক থেকেই মস্ত প্ল্যাটফর্মের দিকে নজর রেখেছে ‘বড় ঘড়ি’। কত প্রেম, কত বিচ্ছেদ, কত প্রতিজ্ঞা, কত মন ভাঙা, কত গল্পের শুরু ও শেষ দেখেছে এই ঘড়ি। মাথার উপরে সজাগ সেই ঘড়ি, কিন্তু কতজনই বা দু’দণ্ড দাঁড়িয়ে গল্প জানতে চেয়েছে?
advertisement
আরও পড়ুন: ৮০ বছরের হাওড়া ব্রিজে কোনও নাট-বল্টু নেই! কীভাবে ঝুলে রয়েছে জানেন? অজানা কাহিনি
ঘড়িটির একটি কাঁটা প্ল্যাটফর্ম নম্বর ১ থেকে ৮ –এর দিকে মুখ করে। অন্যটি কাঁটাটি ৯ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঘণ্টার কাঁটার দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ১৮ ইঞ্চি, মিনিটের কাঁটা ২৪ ইঞ্চি দীর্ঘ। লন্ডনের জেন্টস কম্পানির তৈরি এই ঘড়ি। হাওড়া স্টেশনে ঘড়ি ব্যবসায়ী প্রয়াত দেবপ্রসাদ রায় এই ঘড়িটি স্থাপন করেছিলেন।
ঠিক একইরকম দেখতে আর একটি ঘড়ি তৈরি করেছিল জেন্টস কম্পানি। যেটি স্থাপন করা হয়েছিল স্টেশনের বাইরে। যার একটি কাঁটা হুগলি সেতুর দিকে তাকিয়ে, অন্যটি হাওড়া বাস স্ট্যান্ডের দিকে।
আগে এই ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল ঘড়িগুলি একটি পালসার ডিভাইস দ্বারা চালিত হত, যা রেডিও পালসের গণনার উপর নির্ভর করে থাকত। কন্ট্রোল অফিস থেকে বসে সময় সেট করা যেত। পরবর্তীতে এর কেবল তারে সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। পালসার ডিভাইসটিকে ঘড়িতেই রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঘড়িতে দম দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
‘হাওড়ার বিগ বেন’ নীরবে সময়ের সাক্ষী হয়েই কাটিয়ে দিল ৯৭টি বছর। আরও যে কত শত বছর কাটিয়ে দেবে, তার ইয়ত্তা নেই। ইস্টার্ন রেলওয়ে এই ঐতিহ্যবাহী ঘড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে।