কলকাতা: বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল টানাপড়েন৷ শেষকালে চরমে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবং তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের সংঘাত৷ বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করলেন ফিরহাদ হাকিম৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুর্শিদাবাদ সফরের দিনই সাসপেন্ড করা হল হুমায়নকে৷
advertisement
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘‘দলবিরোধী কাজ করার জন্য ভরতপুরের বিধায়ককে সাসপেন্ড করছে তৃণমূল৷ পার্টির ঊর্ধ্বতম নেতৃত্বের মতামত নিয়ে হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করা হল৷ ধর্ম নিয়ে যাঁরা ভেদাভেদ করে তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক থাকবে না৷’’
আরও পড়ুন: দেশের ৩টি ব্যাঙ্ককে সবচেয়ে নিরাপদ ঘোষণা করে দিল RBI, বিবৃতি জারি করে D-SIB তকমা
ফিরহাদ জানান, আইন শৃঙ্খলা প্রশাসন দেখবে। দলের তরফ থেকে তিনবার বিধানসভায় ডেকে হুমায়ুন কবীরকে সতর্ক করা হয়েছিল৷ এই বিষয় নিয়ে বলা হয়েছিল তিনি শোনেনি বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ৷
রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম হুমায়ুনের সাসপেনশনের কথা ঘোষণা বলেন, ‘‘যে ভেদাভেদের রাজনীতি করবে আইন তার ব্যবস্থা নেবে ৷ ভেদাভেদের রাজনীতি করতে দেব না৷ এই ধরনের মানুষের জন্য সাধারণ মানুষের হত্যা হয়৷’’
২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন হুমায়ুন৷ সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘ভেদাভেদ করে বাংলায় আগুন লাগানোর চেষ্টা করছেন৷ এটা বিজেপির সুবিধা হবে৷ হুমায়ুনের মতো লোককে দিয়ে বিজেপি এই কাজ করছে৷ এটা বড় ষড়যন্ত্র। আগে থেকে পূর্বপরিকল্পিত ছিল৷’’
অন্যদিকে, আজ মুর্শিদাবাদে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা৷ তার আগে সভাস্থলে পৌঁছেছিলেন হুমায়ুন৷ সেখানেই দল থেকে সাসপেনশনের খবর পান৷ হুমায়ুন কবীরও পাল্টা দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি আগামিকালই দল ছাড়বেন৷ তাঁকে ডেকে এনে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ভরতপুরের বিধায়ক৷
ফিরহাদ অবশ্য জানান, ‘‘সভাস্থলে যেতেই পারেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়েই ওঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ৷ শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত৷’’
দীর্ঘদিন ধরেই প্রকাশ্যে দল বিরোধী মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছিল হুমায়ুনকে৷ এমনকি, আলাদা দল তৈরির হুঁশিয়ারি ছুড়ে দিলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক৷ কিন্তু, গত বুধবার তাঁর এক মন্তব্য চূড়ান্ত বিতর্ক সৃষ্টি করে৷ ৬ ডিসেম্বর NH-34-এর ‘দখল’ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন৷ তীব্র অস্বস্তিতে পরে তৃণমূল৷ তারপরেই তৃণমূলের এই সিদ্ধান্ত৷
