তবে হাওড়া মেট্রো স্টেশন থেকে যাতায়াত করতে হলে এসক্যালেটরের ভয় কাটাতে হবে। নাহলে ২০০ সিঁড়ি ভেঙে ওঠা নামা করতে হবে 'গভীরতম' স্টেশনে। ধীরে ধীরে সেজে উঠছে দেশের সবচেয়ে গভীরে তৈরি হওয়া মেট্রো স্টেশন। হুগলি নদীর পাশে, অন্যতম ব্যস্ত রেল স্টেশনের সঙ্গে জুড়ে তৈরি হওয়া হাওড়া মেট্রো স্টেশনের শেষ অধ্যায়ের কাজ চলছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। তাই মাটির গভীরে যেতে চাইলে এবার আসতে হবে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে হাওড়া মেট্রো স্টেশনে। ইতিমধ্যেই হাওড়া মেট্রো স্টেশনকে ‘দ্য ডিপেস্ট সাবওয়ে স্টেশন’ -এর তকমা দিয়েছে রেলওয়ে বোর্ড।
advertisement
এতকাল দিল্লি মেট্রোর হাউস খাস এই তকমা পেয়ে এসেছে। যার গভীরতা ৩০ মিটার। চৌরিবাজার সেক্ষেত্রে হলুদ স্টেশনের তকমা পেয়েছে ২৫ মিটার গভীরতার জন্য। এবার তাদের টেক্কা দিয়ে হাওড়ার মেট্রো স্টেশন ৩২.০০৪ মিটার (১০৫ ফুট) গভীরে তৈরি হওয়ায় মিলল ‘গভীরতম’র তকমা। কলকাতা মেট্রোর ইস্ট-ওয়েস্টে হাওড়া স্টেশনকে ‘কি স্টেশন’ বলা হয়েছে। কারণ হাওড়া দেশের মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম স্টেশন। এই স্টেশনের সংযোগকারী মেট্রো যে রীতিমতো ব্যস্ততম মেট্রো স্টেশন হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশে প্রথম নদীর তলা দিয়ে এই মেট্রো যাওয়ার পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করেছেন রেল মন্ত্রকের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: চল্লিশ মিনিটের প্রাণঘাতী আগুন, পুড়ে ছাই বাবা-ছেলে! সাতসকালে হাড়হিম ঘটনা কলকাতায়
৩০ মিটার নদীর গভীর দিয়ে দৌড়বে এই মেট্রো। নদীর তলায় দু’টি টানেল ৫২০ মিটারের। যার এক প্রান্তে হাওড়া, অন্যদিকে মহাকরণ। এই দূরত্বে পৌঁছতে মেট্রো সময় নেবে মাত্র এক মিনিট বা তারও কম সময়। ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলবে এই মেট্রো।হাওড়া থেকে ধর্মতলা পৌঁছতে মেট্রোর জুড়ি মেলা ভার। অসংখ্য যাত্রী সড়ক পথের মায়া ছেড়ে পাতাল পথে যাতায়াত করবেন, এ বিষয়ে নিশ্চিত রেল বোর্ডের কর্তারা। ওই সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া মেট্রো স্টেশনের গঠন কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। জমি থেকে ১০৫ ফুট নিচে এই স্টেশন। নিচে নামতে চারটি লেবেল ও পাঁচটি স্ল্যাব পেরতে হবে। সিঁড়ি ভাঙতে যাঁদের অসুবিধা তাঁরা চলমান সিঁড়ি ব্যবহার করবেন। থাকছে লিফটের ব্যবস্থাও। এজন্য মেট্রো রেল সব ব্যবস্থাই রেখেছে আধুনিকভাবে। এই মেট্রো স্টেশনে থাকছে ২৬টি এসক্যালেটর। থাকছে ৭টি লিফট। চার তলা এই স্টেশনের দুই ও তিন তলায় আছে কন্ট্রোল ও মেকানিক্যাল রুম। মোট ৪টি প্ল্যাটফর্ম থাকছে। হাওড়া ময়দান হোক বা মহাকরণ যে দিক থেকেই ট্রেন আসুক না কেন, রেকের উভয় দিকের দরজাই খুলে যাবে৷ কারণ যাত্রী চাপ সামলাতে এই ব্যবস্থাই রাখা হচ্ছে। স্টেশন জুড়ে থাকছে প্রায় ১৫'টি টিকিট কাউন্টারএই স্টেশন তৈরি করতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল নির্মাণকারী সংস্থাকে।
আরও পড়ুন: ৭১,০০০ চাকরির নিয়োগপত্র বিতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী, মোদির কর্মসূচি ঘিরে তুঙ্গে শোরগোল
হুগলি নদী কাছে থাকার দরুণ, জলের চাপে একটা সময় কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। এছাড়া পাতালে স্টেশন বানানোর সময়ে নজর রাখতে হয়েছিল মাটির উপরেও। কারণ হাওড়া স্টেশন থেকে যাতায়াত করে রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দীর মতো একাধিক ট্রেন। ফলে কোনও সমস্যা তৈরি হলে দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকত। তাই অত্যন্ত সাবধানে কাজ করতে হয়েছে। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, আর স্বল্প সময়ের অপেক্ষা৷ তারপরেই হাওড়া স্টেশন থেকে মানুষ মেট্রোয় যাতায়াত করতে পারবেন। এই মেট্রো পথ চালু হয়ে গেলে, সুবিধা হবে লক্ষাধিক যাত্রীর৷ আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনেই এই পরিষেবা চালু হবে। পাশাপাশি স্টেশন সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।