হরিদেবপুরের ঘটনায় কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে আলো বিভাগের তিন আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও একজন SAE-কে সাসপেন্ডের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও সেই সংক্রান্ত নির্দেশ এখনো লিখিত ভাবে হাতে পাননি সংশ্লিষ্ট মহিলা SAE বলে দাবি অ্যাসোসিয়েশনের। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ব্যাপক ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা। প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতে ইঞ্জিনিয়ারদের উপর কোপ দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ বলে দাবি কেএমসি ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড আলায়েড সার্ভিসেস এসোসিয়েশনের।
advertisement
প্রতিবাদ জানাতে কলকাতা পুরসভার সামনে মিছিল করেন তারা। কর্মীবর্গ বিভাগ, জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য, কর মূল্যায়ন, নিকাশি সহ একাধিক বিভাগে মিছিল ঘুরে মেয়র্স গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। অবিলম্বে শাস্তি প্রত্যাহার এর দাবি জানিয়ে স্লোগান তোলেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি পার্থ গুপ্ত, সম্পাদক মানস সিনহা। এছাড়াও ছিলেন কেএমসি ক্লার্কস ইউনিয়নের সম্পাদক অমিতাভ ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন : পুরীর ভোগ কলকাতার রথযাত্রায়! সবুজ মুগ ডাল-গোবিন্দ ভোগ চালে জগন্নাথের মহাভোজ
এদিন মানস সিনহা বলেন, আমাদের এক মহিলা SAE কে সাসপেন্ড করা হয়েছে। লিখিত নির্দেশিকা এখনও তিনি পাননি। সংবাদমাধ্যমে তার নাম ভাসিয়ে দিয়েছে। ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই ঘটনায় উনি দায়ী।
কেএমসি ক্লার্কস ইউনিয়নের সম্পাদক অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা বার বার কর্তৃপক্ষকে বলেছি শূন্য পদে লোক নিয়োগ করতে হবে। প্রতি ওয়ার্ডে ১২-১৪ জন করে কর্মী থাকত তারা রক্ষণাবেক্ষণ করত। সেই নিয়োগ বন্ধ। SAE কে ঘুরে সাড়ে তিন হাজার ল্যাম্পপোস্ট দেখতে হবে?"
মানস বাবু আরও বলেন, "ওই মহিলা ইঞ্জিনিয়ারের ওপর দুটি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দুটো আলাদা বরোর। ওই ইঞ্জিনিয়ার স্পষ্ট জানিয়েছেন ওটা বিএসএনএল পোস্ট ছিল সেখানে পুরসভা কোনো আলো লাগায় নি। তিনি এমন কোনও নির্দেশ দেননি। তাহলে কিসের ভিত্তিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সাস্পেনশনের কথা বাজারে ভাসিয়ে দেওয়া হল? এটা চক্রান্ত।"
আরও পড়ুন : রথের দিনেই বর্ষার ইনিংস শুরু দক্ষিণবঙ্গে! ভিজবে বেশ কয়েকটি জেলা! আবহাওয়ার Latest Update
কেএমসি ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড আলায়েড সার্ভিসেস এসোসিয়েশনের দাবি, তদন্ত কমিটির মুখোমুখি বসানো হয়নি সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে। কারো বয়ান নেওয়া হয়নি। কেএমসি ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড আলায়েড সার্ভিসেস এসোসিয়েশনের সম্পাদক মানস সিনহা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, মাত্র ২৭ থেকে ৩০ জনকে দিয়ে ১৪৪ ওয়ার্ডের কাজ করানো হচ্ছে। স্থায়ী পদে লোক নেবে না। যারা কাজ করছেন তাদের উপর বাড়তি বোঝা চাপাবে। মানুষ আক্রান্ত হলে ইঞ্জিনিয়ারকে বলির পাঁঠা করা হবে।
শুধু আলো বিভাগ নয় পানীয় জল সরবরাহ বিভাগ নিয়ে আরো বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মানস সিনহা। তিনি বলেন, সারা কলকাতা জুড়ে এই প্রশাসন অগণতান্ত্রিক ভাবে ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে বেআইনি কাজ করাচ্ছে। গভীর নলকূপ যথেচ্ছ খোলা অবস্থায় চালানো হচ্ছে। কারো থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না। কোনো কর্মীকে দিয়ে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করানো হয় না। এসব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদে আমরা ইঞ্জিনিয়াররা আজ পথে নেমেছি পুর প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন : সর্বনাশ! ইলিশ ভেবে চন্দনা আনছেন না তো বাড়িতে? টাটকা ইলিশ চিনবেন কী করে? রইল ৭ মোক্ষম টিপস
বৃহস্পতিবার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুর কর্মীদের ও ইঞ্জিনিয়ারদের আরো সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। ক্যাজুয়াল মনোভাব যে কোনোভাবেই নেওয়া যাবে না, সে কথা আগেই তিনি জানিয়েছিলেন। এদিন ফিরহাদ হাকিম পুর ইঞ্জিনিয়ারদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন, প্রশাসন প্রশাসনের মত চলবে এবং ব্যক্তিকে আরও দায়িত্ববান হতে হবে। ওখানে কে লাইটটা লাগলো। সরাসরি দায়িত্ব কার! নিশ্চিত ভাবে তদন্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি করেছে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে কলকাতা পুরসভা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।