রামপুরহাটে তৃণমূলের উপপ্রধানের খুন এবং তার জেরে কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আট জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে৷ যে ঘটনার কড়া নিন্দা করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Governor Jagdeep Dhankhar)৷ রাজ্যে আইনের শাসন নেই বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি৷ দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনায় রাজ্যপালের মন্তব্যে ব্যথিত বলে পাল্টা চিঠি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
advertisement
আরও পড়ুন-পছন্দের শীর্ষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কিন্তু কেন? রইল বিস্তারিত
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) লিখেছিলেন, 'আপনার এই ধরনের বিবৃতি কাম্য নয়। আপনি জানেন না গোটা ঘটনা নিয়ে সিট গঠন হয়েছে। সিনিয়র মন্ত্রীদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। জেলাশাসক, পুলিশ গোটা বিষয়টি দেখছে। ইতিমধ্যে দশজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে এই ধরনের ঘূন্য অপরাধের কড়া শাস্তি দেওয়ার জন্য আমি নিজে পুলিশের ডিজি-কে নির্দেশ দিয়েছি৷'
আরও পড়ুন- Calcutta High Court: এক দিনের খুঁত ধরতে গিয়ে হাইকোর্টে ফাঁপড়ে শিক্ষাসচিব !
চিঠিতে রাজ্যপালের উদ্দেশ্য়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছিলেন, 'বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির ঘটনা নিয়ে আপনার কোনও বিবৃতি থাকে না। আমাদের রাজ্য শান্তিপূর্ণ। আপনার বিবৃতি রাজনৈতিক ভাবে ইঙ্গিতপূর্ণ যা বিরোধী দলগুলিকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর রসদ হয়ে দাঁড়ায়।'
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে (Governor Jagdeep Dhankhar) মনে করিয়ে দিয়েছেন, বীরভূমের এই ঘটনায় তৃণমূলেরই একজন উপপ্রধান প্রথমে খুন হয়েছেন৷ তার পরে কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে এবং তাতে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে৷ দোষীরা কোন দলের, তা তদন্তেই জানা সম্ভব বলে রাজ্যপালকে চিঠিতে লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পাশাপাশি, এই ঘটনার নেপথ্যে বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনাও যে উড়িয়ে দেওয়া যায় না, রাজ্যপালকে সেকথাও লিখেছেন মমতা৷
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে আরও দাবি করেছেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদ দিলে পশ্চিমবঙ্গ যথেষ্ট শান্ত রাজ্য৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও অভিযোগ, যখনই কোনও অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, রাজ্যপাল রাজনৈতিক ভাবে ইঙ্গিতপূর্ণ এমন কিছু মন্তব্য করেন, যা রাজ্য সরকারকে বদনাম করে৷
রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক পদে থেকে এই ধরনের ঘটনা ঘটলেই আলটপকা এবং অপ্রত্যাশিত মন্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য জগদীপ ধনখড়কে পরামর্শ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'ট্যুইট করে আপনি বলেছেন যে ধরনের ভয়াবহ হিংসা এবং লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে তাতে বোঝা যায় রাজ্য পুরোপুরি হিংসা এবং আইনের শাসনের বাইরে চলে গিয়েছে৷ আপনার এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক এবং আপনি যে ধরনের সম্মানীয় পদে আছেন তার সঙ্গে মানানসই নয়৷'
তারপরেই রাজ্য়ের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আবার তোপ দেগেছেন ধনখড়। ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার উল্লেখ করে প্রশ্ন তুলেছেন সিটের গ্রহণযোগ্য়তা নিয়েও। এবার মুখ্য়মন্ত্রী কী জবাব দেন সেটাই দেখার।