গত শনিবার রাতে বাসন্তীর ফুল মালঞ্চ এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে খুন হন জিয়ারুল মোল্লা নামে এক যুব তৃণমূল কর্মী। এর পরেই নিহতের পরিবারের সদস্যরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চান। পুলিশি তদন্তেও অনাস্থা প্রকাশ করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির উপরে হঠাৎ উড়ে এল ড্রোন! ভোরবেলা দিল্লিতে রহস্য, তদন্তে পুলিশ
advertisement
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত জায়গায় অশান্তি হচ্ছে সেখানেই পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রবিবার কোচবিহার থেকে ট্রেনে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাজ্যপাল। ট্রেন থেকেই নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।
এ দিন ভোরে পদাতিক এক্সপ্রেসে শিয়ালদহ পৌঁছন রাজ্যপাল। স্টেশনে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে গাড়িতেই বাসন্তীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন রাজ্যপাল। বেলা বারোটার কিছু পরে বাসন্তী পৌঁছন সি ভি আনন্দ বোস।
আরও পড়ুন: বাড়ি, খাদানে বিপুল বিস্ফোরক! পঞ্চায়েত ভোটের মুখে তৃণমূল প্রার্থীকে তলব করল এনআইএ
ফুল মালঞ্চ এলাকায় পৌঁছলেও রাস্তা সংকীর্ণ হওয়ায় গ্রামে ঢুকতে পারেনি রাজ্যপালের গাড়ি। এর পর হেঁটেই গ্রামে গিয়ে নিহত যুব তৃণমূল কর্মী জিয়াউল মোল্লার বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল। যে জায়গায় জিয়ারুল মোল্লাকে গুলি করা হয় বলে অভিযোগ, সেই জায়গাটিও খতিয়ে দেখেন রাজ্যপাল। কথা বলে়ন পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে। তবে শেষ পর্যন্ত নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়ির কিছুটা দূর থেকেই ফিরে যান রাজ্যপাল৷ রাজ্যপাল শেষ পর্যন্ত তাঁদের বাড়িতে না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত তৃণমূল কর্মীর মেয়ে৷ তিনি নিজেও এবার পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপালকে বিভ্রান্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন৷
রাজ্যপালকে দেখে ভিড় জমাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরাও। রাজনৈতিক হিংসা, অশান্তির অভিযোগ তোলেন অনেকেই। গ্রামে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানান তাঁরা। রাজ্যপাল তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, যে কোনও সমস্যা হলে তাঁরা যেন রাজ ভবনে অভিযোগ জানান। গ্রামবাসী এবং গ্রামের শিশুদের মিষ্টি, লজেন্সও বিলি করেন রাজ্যপাল।
এর আগে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা ভাঙড়, ক্যানিং, কোচবিহারে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এবার তিনি পৌঁছলেন বাসন্তীতে।
রাজ্যপালের বাসন্তী যাত্রা নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস৷ দলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরেই রাজ্যপাল বিজেপি-র নেতার মতো আচরণ করছেন। এটা রাজ্যপাল সুলভ আচরণ নয়। যদি পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের মধ্যে কোথাও কোনও সমস্যা, ভাঙন থাকেও সেখানে বিজেপি নেতাদের মতো রাজ্যপাল চলে যাবেন? রাজ্যকে সাহায্য, সহযোগিতার বদলে ভাঙন ধরানো রাজ্যপালের কাজ হতে পারে না। তবে এর আগে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জগদীপ ধনখড়রা মিলে ২০২১-এ কিছু করতে পারেননি, এবারে এই রাজ্যপালও পারবেন না৷’
অন্যদিকে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্যপালের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ‘যাঁর অশান্তি থামানোর কথা তিনি বাড়াচ্ছেন৷ আর রাজ্যপাল এলাকায় এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছেন৷ দুয়ারে সরকারের বদলে দুয়ারে রাজ্যপালকে দেখছি আমরা৷’