প্রঃ কী কারণে কলকাতার পজিটিভিটি রেট ৩৭.৫৪% পৌঁছে গেল? আপনার কী মনে হয়?
ফিরহাদ: দেখুন, যাদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, তাঁরাই টেস্ট করাতে যাচ্ছেন। কিন্তু প্রায় ৪০% মানুষ উপসর্গহীন। তাঁরা কিন্তু টেস্ট করাচ্ছেন না। এই উপসর্গহীনরাই সমস্ত জায়গায় যাচ্ছেন এবং তাঁরাই সুপারস্প্রেডার হিসেবে কাজ করছেন। এবার সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি, কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার তেমন বেশি নয়। মানুষ সংক্রামিত হচ্ছেন আবার সুস্থও হয়ে উঠছেন। কলকাতার মানুষ যতটা না স্বাস্থ্য সচেতন, তার থেকে অনেক বেশি আনন্দ করতে ভালোবাসেন। তাঁরা এইসব সমস্যাকে অত গুরুত্ব দেন না। উৎসবের মরসুম শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু আমরা কিন্তু কলকাতার মানুষকে কারণ ছাড়াই ঘুরে বেড়াতে দেখছি।
advertisement
প্রঃ বিরোধীরা বলছেন, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোন বিধিনিষেধ না থাকা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। আপনি কী বলবেন?
ফিরহাদ: দেখুন, দুর্গাপুজোতেও প্রচুর মানুষ বাইরে বেরিয়েছিলেন। তাঁদের অধিকাংশ মাস্কও পরেননি। কিন্তু এই পরিস্থিতি হয়নি। আসলে এই তৃতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের হার অত্যন্ত বেশি। মুহূর্তেই মানুষ সংক্রমিত হয়ে পড়ছে। এই কারণেই এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ! একলাফে ৯১ হাজার ছুঁই ছুঁই দৈনিক সংক্রমণ! করোনা-কম্পে কাঁপছে গোটা দেশ...
প্রঃ কলকাতা পুরসভা কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করবে?
ফিরহাদ: আমরা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ করছি। প্রচার, ভ্যাকসিনেশন, স্যানিটাইটেশনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় কোভিড বিধি নিয়ে হোডিং লাগিয়েছি, বাজারে মাস্ক ছাড়া বেচাকেনা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অল্পবয়সীদের টিকাকরণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানানো হচ্ছে সকলের জন্য বুস্টার ডোজ চালু করতে। বর্তমানে কলকাতায় ৪৮ কনটেইনমেন্ট জোন রয়েছে। প্রতিদিন বিষয়গুলি নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
প্রঃ প্রচুর স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ কর্মী, পুরকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন কীভাবে?
ফিরহাদ: ৫০% কর্মী নিয়ে আমরা কাজ চালাচ্ছি। বাকিরা আক্রান্ত। রস্টার করে পরিস্থিতি ম্যানেজ করার চেষ্টা চলছে। ৭ দিনের আইসোলেশন পিরিয়ড আমাদের সাহায্য করবে। যারা উপসর্গহীন তাঁরা ৭ দিন পরেই কাজে যোগ দিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: কোভিড পরিস্থিতিতে কী ভাবে বিধানসভা নির্বাচন, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে বসছে কমিশন
প্রঃ কোথায় পৌঁছতে পারে এই পরিস্থিতি?
ফিরহাদ: দেখুন, এবার সংক্রমণের হার খুব বেশি, কিন্তু হাসপাতালে কম মানুষকে যেতে হচ্ছে। আমরা প্রতিদিন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় বসছি। জানুয়ারিতে এই চূড়া তুঙ্গে উঠবে, ফেব্রুয়ারিতে কমতে শুরু করবে। আমরা আমাদের করোনা যোদ্ধাদের নিয়ে পরিস্থিতি সামলে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছি।
প্রঃ কলকাতার মানুষকে মেয়র হিসেবে কী বার্তা দেবেন?
ফিরহাদ: দয়া করে সাবধানে থাকুন, মাস্ক পরুন, এটা মাস্ট। প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেরোন, কিন্তু অকারণ বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন না। দুশ্চিন্তায় ভুগবেন না। আমরা লড়াই করে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসবই।