মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার এরাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে আর চার-পাঁচদিনে সীমাবদ্ধ রাখেনি। বরং উৎসবকে ব্যপ্ত করে দিয়েছেন সময় এবং আয়োজনের নিরিখে। তাই সূচনালগ্নও যেমন এগিয়ে এসেছে, তেমনই বিসর্জনের বিষাদ ঢাকতে বছর কয়েক ধরে মুখ্যমন্ত্রীর এই কার্নিভালর আয়োজন। শহরের সেরার সেরা পুজোকমিটিগুলির প্রতিমা রেড রোড ধরে একে একে এগিয়ে যায় বাজে কদমতলা ঘাটের দিকে। পথের দু’ধারে বসে সেই দৃশ্য উপভোগ করতে পারলেন প্রচুর সাধারণ দর্শকও। আর এক দিনেই এই সমস্ত পুজো একসঙ্গে স্বচক্ষে দেখলেন বিদেশি অভ্যাগতরা। তাই প্রতি বছর পুজো শেষে এই কার্নিভ্যালের প্রতি একটা বাড়তি আকর্ষণ তৈরি হয়েছে কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলের মানুষজনেরা। এ যেন ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ’। ২০১৯-এর পর দু’বছর কোভিডের জন্য এই মেগা কার্নিভাল আয়োজন করা যায়নি। তাই এবারের কার্নিভাল ঘিরে জাঁকজমক ছিল অনেক বেশি।
advertisement
আরও পড়ুনঃ নেই একডালিয়া, টালা! একাধিক গাইডলাইন পুলিশের, এক নজরে রেড রোড পুজো কার্নিভাল
আরও পড়ুন - Durga Puja Carnival: ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে কার্নিভালের মঞ্চ ছাড়লেন পুরপ্রধান! কাণ্ড সরগরম
পূর্বঘোষণা মতো শনিবার বিকেলেই রেড রোড মেতে উঠল পুজো কার্নিভ্যালে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এ বারের কার্নিভ্যালটি সাজাতে চেয়েছেন বাংলার সংস্কৃতির আদলে। তাই মঞ্চটি পুরোপুরি তৈরি হয়েছে অনেকটা রাজবাড়ির স্থাপত্যের আদলে। লোকসংগীত ও লোকনৃত্য শিল্পীদের এবার বাড়তি কদর। প্রতিমা প্রদর্শনীকে আরও রঙিন করতে ছিল তাঁদের পারফরম্যান্স।
বিগ বাজেটের সমস্ত পুজো তো বটেই, এ ছাড়া কলকাতা সংলগ্ন আশেপাশের তথাকথিত নামী পুজোগুলিও এ বারের কার্নিভ্যালে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সংঘ, ভবানীপুর ৭৫ পল্লি, হিন্দুস্তান পার্ক সর্বজনীনের পাশাপাশি বরানগর নেতাজি কলোনি, লোল্যান্ডের মতো পুজোও সকলে দেখার সুযোগ পেলেন এই রেড রোডে বসে। প্রতিটি পুজো কমিটির জন্য ৩ মিনিট করে সময় বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যেই তাঁরা নিজেদের যাবতীয় প্রদর্শনী শেষ করলেন। কার্নিভাল শেষে সমস্ত প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে বাজা কদমতলা ঘাটে।
মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও দর্শকাসনে ছিলেন মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিনোদন জগতের বিশিষ্টরা। ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতা পুলিশের সিপি। বিদেশি অতিথিরা, বিনোদন জগতের তারকারা হাজির ছিলেন। তাই নিজেদের উপস্থাপনাকে সর্বাঙ্গীন সুন্দর করতে তুলতে মরিয়া ছিল সমস্ত পুজো কমিটিই। কলকাতা পুলিশের অসাধারণ পারফরম্যান্স বাইক নিয়ে সকলের নজর কেড়েছে। এছাড়া অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার নাচ। এছাড়া একাধিক পুজো কমিটির শিশুদের পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ট্রুপও নজর কেড়েছে। এক দুর্গোৎসব শেষে আরেকটির জন্য এক বছরের অপেক্ষার মাঝে এই রেশটুকুই যা রয়ে যায়। তবে ঠাকুর দেখার রেশ থাকল শনিবার অবধি।