প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠান শেষে হোটেলে ফিরে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শিল্পীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রখ্যাত শিল্পীর। কপাল ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেও জানা যাচ্ছে। ঠিক কী কারণে তাঁর মৃত্যু জানতে অপেক্ষা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের। যদিও প্রাথমিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
advertisement
বুধবার সকালে আকস্মিক এই শিল্পীর প্রয়াণ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,"গত কিছুদিন ধরে শিল্পী কলাকুশলীদের মধ্যে এই ধরনের দুর্ঘটনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে অভিনেতা,অভিনেত্রী, মডেল এটা আমি জানি না কেন এরকম হচ্ছে। এটা করোনার প্রকোপ কিনা সে নিয়েও চিকিৎসকরা বলতে পারবেন। কিন্তু এ ধরনের অসময়ে চলে যাওয়া নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। আমি তার পরিবারকে সমবেদনা জানাই।" (Dilip Ghosh KK Death)
আরও পড়ুন: আজই কলকাতায় আসছেন KK-র পরিবার, ময়নাতদন্ত SSKM-এ
একইসঙ্গে এদিন নজরুল মঞ্চে চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি ফুটে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, " এসি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, বাইরে ঝামেলা হয়, সব মিলিয়ে ঘামছিলেন তিনি। বারবার বলছিলেন এত আলো সহ্য করতে পারছিলেন না। আমি জানি না কেন বারবার এই ধরনের ঘটনা ঘটে। এখানকার পুলিশ প্রশাসন কী করছে? কোনও বিখ্যাত ব্যক্তি 'সেলিব্রেটি' এলে সাধারণ মানুষের মধ্যে উন্মাদনা থাকেই, অব্যবস্থা তৈরি হয়। কিন্তু সেটা দেখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি থাকা উচিত। এই ধরনের শিল্পীকে যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া তাদের কর্তব্য। আপনি ভাবুন হাজার হাজার লোকের মধ্যে হলে এসি বন্ধ করে দেওয়া হল। বাইরে যা গরম। জানি না সেই কারণে তিনি অসুস্থ হয়েছেন কিনা! ঘটনা যাই হোক এই ধরনের অবস্থা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ যেন তৈরি না হয়, সরকারের দেখা উচিত।"
মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ছেড়ে চলে গেলেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কেকে। কলকাতাতেই অনুষ্ঠান করতে এসে গতকাল প্রয়াত হয়েছেন গায়ক। তাঁর মৃত্যুতে নিউ মার্কেট থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, মঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালীনই অসুস্থ বোধ করছিলেন কেকে। বার বার ঘাম মুছছিলেন। অস্বস্তি হচ্ছিল, বারবার স্পটলাইট বন্ধ করতে বলছিলেন কেকে। নজরুল মঞ্চে কলেজের গানের অনুষ্ঠান থেকে হোটেলে ফিরে বমি করেন শিল্পী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: ‘KK-র গান আমার অসহ্য লাগে’... যা লিখলেন শ্রীজাত!
আরও পড়ুন: মর্গ থেকে SSKM-এ নিয়ে যাওয়া হবে কেকে-র দেহ, কিন্তু ময়নাতদন্ত কেন? নেপথ্যের আসল কারণ কী?
১৯৬৮ সালে দিল্লিতে জন্ম কেকের। শিল্পীর পুরো নাম কৃষ্ণকুমার কুন্নথ। বলিউডে নিজের সফর শুরুর আগে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিজ্ঞাপনের ‘জিঙ্গল’ গেয়েছেন তিনি। মুম্বইয়ে কেরিয়ার শুরুর আগে বেশ কিছুদিন মার্কেটিংয়ের কাজও করেছেন। প্রথমে বিজ্ঞাপন এবং টেলিভিশনেই কাজ শুরু করেন কেকে। তারপর অ্যালবামের কাজে মন দেন। অল্প সময়েই ছুঁয়ে নেন সাফল্যের সিঁড়ি। তারপরের ইতিহাস শুধুই উত্তরণের ইতিহাস। কিন্তু এমন শিল্পীর এমন 'অপ্রত্যাশিত' মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়ে গেল গোটা দেশের সঙ্গীতপ্রেমীদের।