মঙ্গলবার এক প্রেস বিবৃতিতে দলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাতিল ও পরিত্যক্ত সিঙ্গুর প্রকল্পের জন্য টাটা মোটরসকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি নিষ্ঠুর অবিচার। টাটা মোটরস দাবি করেছে যে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল সিঙ্গুরের বাতিল এবং পরিত্যক্ত ন্যানো কারখানা প্রকল্পের জন্য ৭৬৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ এবং ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ থেকে শুরু করে ক্ষতিপূরণের পেমেন্ট সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত ১১ শতাংশ বার্ষিক সুদ সহ তা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন নিগম (ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন)-এর কাছ থেকে এই টাকা তোলা হবে বলে জানা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের জনগণের কাছে এর চেয়ে অযৌক্তিক, স্বেচ্ছাচারী এবং অন্যায় আর কিছু হতে পারে না। একটি বাতিল পরিত্যক্ত প্রকল্প এবং ধ্বংস হয়ে যাওয়া কৃষি জমির জন্য এখন এই অতিরিক্ত বোঝা বহন করতে হবে রাজ্যবাসীকে! উর্বর বহু ফসলি জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের কারণে সিঙ্গুর প্রকল্পটি বাতিল হয়েছিল। স্থানীয় বিরোধিতা অগ্রাহ্য করে কোনও প্রকল্প জনগণের উপরে চাপিয়ে দেওয়া চলে না।’
advertisement
আরও পড়ুন: সিঙ্গুর মামলায় টাটাকে দিতে হবে ৭৬৫ কোটি, রাজ্যকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ ট্রাইবুনালের
সিপিআইএমএল-এর দাবি, প্রকৃত পক্ষে সিঙ্গুর হল এরকম প্রকল্পগুলির বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা জনপ্রিয় প্রতিরোধগুলির একটি উদাহরণ। ওড়িশার নিয়ামগিরি, কলিঙ্গনগর এবং পস্কো থেকে শুরু করে তামিলনাড়ুর তুতিকোরিনের স্টারলাইট পর্যন্ত, জমি অধিগ্রহণ, পরিবেশগত অবক্ষয় বা জোরপূর্বক গণউচ্ছেদের কারণে এই রকম বিরোধিতার অনেক উদাহরণ রয়েছে। ন্যানো গাড়ির ক্ষেত্রে, গাড়ির এই মডেলটি নিজেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল এবং প্রকল্পটিকে তড়িঘড়ি গুজরাতে স্থানান্তরিত করা হলে সেখানেও শেষ পর্যন্ত তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
কৃষি, কৃষিজমি ও জীবিকার উপর আঘাত নামিয়ে আনা পরিত্যক্ত এক প্রকল্পের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান আজ রাজ্যবাসীর কাটা ঘায়ে নতুন করে নুন ছিটিয়ে দেওয়ার মতো বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘সালিশি পুরস্কারের নামে এই নির্লজ্জ কর্পোরেট তোষণকে পশ্চিমবঙ্গের জনগণ এবং সরকারের অবশ্যই বিরোধিতা করা প্রয়োজন।”
ট্রাইবুনালের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে যাচ্ছে রাজ্য। ক্ষতিপূরণের অঙ্কের সঙ্গে এক মত নয় রাজ্য। ইতিমধ্যেই আইনজীবীদের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তরের কর্তাদের দফায় দফায় আলোচনা শুরু হয়েছে।