কেন এরকম সিদ্ধান্ত? দলীয় সূত্রে খবর, আসলে এটা পুরোটাই রাজ্য রাজনীতির সমীকরণ। এক একটা রাজ্যে দলের এক এক রকমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা ও ত্রিপুরা। যে তিনটে রাজ্যে সিপিএমের তুলনামূলক শক্ত সংগঠন রয়েছে। যেখানে এই রাজ্যের ক্ষেত্রে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধেই প্রধান লড়াই সিপিএমের। আবার কেরালায় সিপিএমের প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের পাশের আসনে দলের নেতৃত্বকে দেখলে ভুল বার্তা যেতে পারে নিচুতলায়। আবার ত্রিপুরার পরিস্থিতি ভিন্ন।
advertisement
আরও পড়ুন: বরফ গলে ৪৬ হাজার বছরের মৃত্যুদূত জাগছে সাইবেরিয়ায়, ঘুম ভাঙলেই ভয়ঙ্কর দিন দেখবে পৃথিবী
তাই বিজেপি-বিরোধিতায় কোনও ‘অভিন্ন’ মডেল সব রাজ্যে কার্যকর করা সম্ভব নয়। ত্রিপুরায় কংগ্রেস সম্পর্কে সে রাজ্যে দলের কর্মী-সমর্থকদের অনীহা পেরিয়ে যে ভাবে সনিয়া-রাহুল গান্ধীর দলের সঙ্গে সমঝোতা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়েছে, বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রশ্নে সেই অবস্থানে পৌঁছনো সিপিএমের পক্ষে কঠিন। একই যুক্তি প্রযোজ্য কেরলের ক্ষেত্রেও। ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠনের পরে উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনা করে আপাতত এই অবস্থানই নিল সিপিএমের পলিটব্যুরো। বাংলা ও কেরল, এই দুই রাজ্যে দলীয় নেতৃত্বের ‘বিড়ম্বনা’র কথা মাথায় রেখেই পলিটব্যুরোর আরও সিদ্ধান্ত, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সমন্বয় কমিটিতে এখন সিপিএম প্রতিনিধি পাঠাবে না।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসকে বাংলায় কটা আসন ছাড়বে তৃণমূল? চমকে ওঠা সংখ্যা, আদৌ রাজি হবে হাত শিবির?
আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে দেশ জুড়ে বিরোধী শক্তির একজোট হওয়া যে প্রয়োজন, সেই প্রশ্নে সিপিএমে কোনও দ্বিধা নেই। কিন্তু জাতীয় স্তরের ‘বাধ্যবাধকতা’র পাশাপাশিই আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘বাস্তবতা’ও একই সঙ্গে মাথায় রাখতে হচ্ছে তাদের। যা দলের সামনে উভয় সঙ্কট! এই গোটা পরিস্থিতি নিয়েই দিল্লিতে দু’দিনের পলিটব্যুরো বৈঠকে আলোচনার পরে ঠিক হয়েছে, গণ-আন্দোলনের আরও বেশি বেশি অংশকে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। কিন্তু দেখতে হবে, সাংগঠনিক কোনও কাঠামো যাতে এই পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। এই যুক্তিতেই ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির অংশীদার হতে চাইছে না সিপিএম।