কলকাতায় গঙ্গার ঘাটে আরতি শুরু করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দেশ দিয়েছিলেন এই আরতির ব্যবস্থাপনা করবে কলকাতা পুরসভা। কলকাতার বিভিন্ন গঙ্গার ঘাট পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা জায়গার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ বাজে কদমতলাঘাট। সেই ঘাটেই মন্দির-সহ আরতি ও আলোর ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পুরসভার। আগামিকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আরতির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
advertisement
বেনারসের গঙ্গার ঘাটে আরতি দেখে মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কলকাতার গঙ্গার ঘাটে আরতি শুরু করার মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে প্রকাশের পরই তোড়জোড় শুরু করে কলকাতা পুরসভা। দুই মেয়র পরিষদ সদস্য তারক সিং ও দেবাশিস কুমার বেরিয়ে পড়েন গঙ্গাঘাট পরিদর্শনে। উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য কলকাতার চার পাঁচটি ঘাট চিহ্নিত করেন। নিমতলা, বাবুঘাট, বাজে কদমতলা ঘাট, বাগবাজার ঘাট ছিল তালিকায়। সেই তালিকা পাঠানো হয় নবান্নে। মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের জন্য। শেষে নবান্নের সবুজ সঙ্কেত মেলে বাজে কদমতলা ঘাটে। সেখানেই তৈরি হচ্ছে আরতির জায়গা, দর্শকদের জায়গা, থাকছে মন্দির। ভবিষ্যতে জলপথে নৌকায় বা লঞ্চে ভেসে আরতি দেখানোর চিন্তা ভাবনাও আছে পুর কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন : মার্চের শুরুতেই গরম-বিভীষিকা! কত ডিগ্রিতে পৌঁছবে তাপমাত্রা? শুনে আঁতকে উঠবেন
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, কলকাতাকে তিলোত্তমা করেছে যে আলোর সৌন্দর্য, বাজে কদমতলা ঘাট এলাকাতেও সেই মায়াবী আলোয় মুড়ে ফেলা হয়েছে। বসানো হয়েছে অস্থায়ী মন্দির। থাকছে গঙ্গামূর্তি। বৃহস্পতিবার বিকেলে উদ্বোধন। আরতির জায়গা থাকছে মোট ১১টি। অস্থায়ী আরতির ১১টি কাঠামোয় পর্যায়ক্রমে ২২ জন পুরোহিত এই আরতিতে অংশ নেবেন। সপ্তাহ খানেক ধরে আরতির কর্মশালা হয়েছে এই পুরোহিতদের নিয়ে। আধ্যাত্মিক গানও থাকবে প্রেক্ষাপটে।
আরও পড়ুন : নবম-দশমে ৬১৮ চাকরি বাতিল হচ্ছেই, মাথাই ঘামাল না ডিভিশন বেঞ্চ!
মেয়র ফিরহাদ হাকিম তাঁর মেয়র পারিষদদের মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের গঙ্গা আরতির প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেন। মেয়র পরিষদ তারক সিং ও দেবাশিস কুমার এতদিন ধরে সেই দায়িত্ব সামলেছেন। মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপ রঞ্জন বক্সী আলোর সৌন্দর্যের বিষয়টি দেখেছেন।
পুরোহিতদের ঠিক করা, আরতির জন্য বেনারসের আদলে প্রদীপ তৈরি -সবকিছুর দেখভাল করেছেন তারক সিং। শুধু আরতি নয়, এই কর্মকাণ্ডকে বিশ্বমানের করে তুলতে থাকছে লেজার শো। গঙ্গার ঘাটে এই পুরো বিষয়টি করতে খানিক বেগ পেতে হয়েছে বন্দর ও সেনার অনুমতি নিয়ে। সব সমস্যা পেরিয়ে শেষে আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের গঙ্গা আরতি শুরু হচ্ছে। তাই মেয়র ফিরহাদ হাকিম থেকে পুর আধিকারিকরা, যাঁরা এই গোটা কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন, সকলেই খুশি।
বেনারসের ঘাটে গঙ্গা আরতি দেখতে হাজির হন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে সেই আরতি আরও নান্দনিক করে তোলা হয়েছে। ফলে দেশ বিদেশের পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ে। সেই আদলেই এ বার পর্যটক টানতে কলকাতা পুরসভার এই উদ্যোগ। কলকাতায় গঙ্গার ঘাটে বিক্ষিপ্তভাবে আরতি হলেও নিয়মিত সন্ধ্যায় গঙ্গারতি সেভাবে হয় না। রাজ্যের পর্যটন মানচিত্র তো বটেই কলকাতার পর্যটনেও এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন হতে চলেছে বাজে কদমতলা ঘাটে গঙ্গা আরতি।